কুষ্টিয়া অফিস:
কুষ্টিয়ায় প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও খুনের ঘটনা। সবশেষ গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শহরের মজমপুর এলাকার মুদি দোকানী মুরাদ হোসেন’র কোর্টপাড়াস্থ বাড়িতে বাউন্ডারি প্রাচীর টপকে ভেতরে ঢুকে ডাকাতির চেষ্টা করে কয়েকজন ডাকাত। তবে মুরাদ হোসেনের স্ত্রী মুক্তা খাতুন (৪৫) এর সাহসীকতায় ব্যর্থ হয় ডাকাতির চেষ্টা। পরবর্তীতে স্থানীয়রা ডাকাত দলের দুই সদস্যকে ধরে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।
বাড়ির মালিক মুরাদ হোসেন মজমপুর এলাকার বিনিময় স্টোরের মালিক এবং শহরের কোর্টপাড়া এলাকার সামসুজ্জোহা সড়কের মৃত আব্দুস সামাদ এর ছেলে।
ভুক্তভোগী মুরাদ হোসেনের স্ত্রী মুক্তা জানান, ঘটনার সময় আমার স্বামী দোকানে ছিল। আমার ছেলে দীর্ঘদিন যাবৎ আমেরিকা প্রবাসী। আমি বাড়িতে একা থাকার সুযোগে ৩ জন মাক্স পরা ডাকাত দলের সদস্য আমাকে জাপটে ধরে রুমের ভেতরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমি তাদের সাথে ধস্তাধস্তি করতে করতে জোরে ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করতে থাকি। এসময় তারা আমাকে বোমা ও পিস্তল দেখিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। এমনকি হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। আমি কোন ভাবে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ঠেকাতে সমর্থ হয়। তারপরও তাঁরা আমাকে কিছু একটা দিয়ে মারধর করে। আমার সারা শরীর ব্যাথা।
তিনি আরো বলেন, আমার চিৎকারে যখন আশেপাশের লোকজন চলে আসে তখন ডাকাত দলের সদস্যরা দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে স্থানীয়রা দুই ডাকাতকে ধরে পুলিশে দেয়। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এঘটনায় আহত মুক্তা খাতুন কুষ্টিয়া সদর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ছিলেন।
স্থানীয়দের বেশ কয়েকজন জানান, আমরা চিৎকার শুনে এগিয়ে এলে ডাকাত দলের সদস্যরা আমাদের বোমা ও পিস্তল দেখিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। আমরা তবুও তাদের ধাওয়া করে ধরতে সমর্থ হয়। পরে দেখি তাদের হাতে থাকা পিস্তলটি খেলনা পিস্তল এবং টেপ দিয়ে প্যাচানো বোমা সদৃশ্য বস্তুটি বোমা নয়।
ডাকাতির চেষ্টাকালে স্থানীয়দের হাতে আটককৃতরা হলেন- মিরপুর উপজেলার বহলবাড়ীয়া গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে তাজু (৪৪) ও শহরতলীর ত্রিমোহনী মীরপাড়া এলাকার মৃত আইয়ুব ড্রাইভারের ছেলে মনির (২৩)। এই ঘটনায় মুরাদ হোসেন বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি এজাহার জমা দিয়েছেন বলে জানা যায়।
বিষয়টি নিয়ে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) পলাশ কান্তি নাথ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদের সাথে কথা বলে জানা যায় এর আগে একজন মুরাদের দোকানে কাজ করতেন। সেখান থেকে তাকে চুরির অপবাদ দিয়ে বের করে দেয় মুরাদ। এসময় তার কিছু আসবাবপত্র মুরাদের বাসায় ছিল। সেগুলো আনতে গিয়েছিল। তবে মুরাদের স্ত্রী ডাকাত ডাকাত করে চিৎকার করলে তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। সেসময় জনতা ধরে মারধর করে। এটা চাপা দেওয়ার জন্য হয়তো বোমা সদৃশ্য বস্তু ও খেলনা পিস্তলের কথা বলা হচ্ছে। তবে আটকৃতদের বিরুদ্ধে চুরির মামলা নেওয়া হয়েছে।