নিজস্ব প্রতিবেদক:
কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলাধীন কয়া বেড় কালোয়া পদ্মা নদীতে জলদস্যুদের হামলায় দুই পুলিশ সদস্য নিখোঁজ হয়েছেন। এঘটনায় এক এসআই সহ তিন জন আহত হয়।
জানা যায়, মা ইলিশ রক্ষায় ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন পদ্মা নদীতে ইলিশ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারে প্রতিনিয়ত কিছু সন্ত্রাসী বাহিনী সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে জেলেদের দিয়ে ইলিশ শিকার অব্যাহত রাখে। ইলিশ শিকার করার সময় পাহাড়ায় থাকে ২০/২৫ জনের সশস্ত্র জলদস্যু দল। এরা পদ্মা নদীর জেলেদের থেকে ছিনতাই, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও নদীপথে ডাকাতির সাথে জড়িত।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বিগত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জিয়াউল হক স্বপন ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইয়াছির আরাফাত তুষার পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন সহ নানা অপকর্ম করেছেন। এই রাজত্ব কায়েম করতে তাঁরা বিশাল এক জলদস্যু বাহিনী তৈরি করে। যার নেতৃত্বে ছিলেন কয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ছলিম বাগ ও ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য টিটন। টিমের অনান্য সদস্যরা হলেন, কয়া ইউনিয়নের বেড় কালোয়া গ্রামের জিয়ার হত্যা মামলা আসামি খালেক মন্ডলের শিপন মন্ডল, লিটন চোর, রুহুল, মুরাদ মন্ডল সহ ১৫/২০ জন। এদের নেতৃত্বে চলত নদী পথের রাম রাজত্ব। আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর অনেকটা কোনঠাসা অবস্থায় রয়েছে তাঁরা। এখন অনেক শুরু করেছে প্রশাসনের দালালি।
সোমবার ভোরে পুলিশের একটি টিম ছলিম বাগ ও টিটন মেম্বারকে সাথে নিয়ে পদ্মা নদী পার হয়ে চর সাদিপুর আসামি ধরতে যায়। নদীর মধ্যে থাকা জেলারা ছলিম মেম্বার ও টিটু মেম্বারকে দেখে চিৎকার শুরু করে। তাঁরা বলতে থাকেন নদীতে বাহিনী আসছে। এরপর কয়েকটি নৌকায় ২০/২৫ জন ছলিম মেম্বার ও টিটন মেম্বারকে মারধর করে নৌকা ডুবিয়ে দেয়। এসময় দুই মেম্বার ও এক এসআই আহত হন। দুই মেম্বার ও এক এসআই সহ ৬ জনকে বেড় কালোয়া গ্রামের কেদু শেখের ছেলে ইয়ারুল শেখ, আতিয়ার রহমান, শফিকুল ইসলাম প্রমুখ উদ্ধার করে।
এদিকে নিখোঁজ দুই এএসআইকে উদ্ধারে কাজ শুরু করেছে কুমারখালী ফায়ার সার্ভিস ও খুলনার একটি ডুবুরি টিম। ছলিম মেম্বার ও টিটন মেম্বারের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
কুমারখালী থানার অফিসার ইনচার্জ নজরুল ইসলাম বলেন, ওয়ারেন্ট তামিল করতে এসআই নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে ৬ জন পুলিশ সদস্য ভোর ৫ টার দিকে চরসাদিপুর যাচ্ছিল। এমন সময় ২/৩টা নৌকায় ১৫/২০ জন এসে হামলা চালায়। তাঁরা পুলিশ বহনকারী নৌকা ডুবিয়ে দেয়। এতে চারজন সাঁতরে নদী পার হয়ে যায়। এখনো এএসআই সদরুল হাসান ও এএসআই মুকুল হোসেন নিখোঁজ হন। তাদের উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিস কাজ করছে।