কুষ্টিয়া অফিস:
হামলার শিকার হয়ে আদালতে মামলা করার পর আদালত থেকে সমন আসায় পুনরায় বাদীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। ১৭ ফেব্রুয়ারি সকালে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জিয়ারখী ইউনিয়নের কমলাপুর এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে। হামলায় গুরুতর আহত ৩ জন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা যায়, ঘটনার সূত্রপাত ২৪শে জুন ২০২৩ সালে। বাদী উজ্জ্বল হোসেন’র দাদী মারা যাওয়ার পর জানাযা শেষে উপস্থিত সকলকে কুলখানীর দাওয়াত দেওয়া হয়। এই দাওয়াতে হামলাকারীরা সন্তুষ্ট হতে পারেননি। তাছাড়া অনেক আগে থেকে উভয় পক্ষের মধ্যে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ বিরাজমান ছিল। যার কারণে একাধিকবার হামলা ভাংচুর ও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় ভুক্তভোগীদের।
ভুক্তভোগী উজ্জ্বল হোসেন জানান, আমার দাদী মারা যাওয়ার পর জানাযার ওখান থেকে কুলখানীতে এলাকার সবাইকে দাওয়াত করি। এই দাওয়াত তারা হয়তো গ্রহন করেননি। তাছাড়া অনেক আগে জায়গা জমি নিয়ে তাদের সাথে আমাদের একটু বিরোধ ছিল। এর আগেও হামলাকারীরা আমাকে মারধর করেছে, আমার বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে। গত ৭/৮ মাস আগে রাতের অন্ধকারে এশার নামাজ পড়ে আমি বাড়ি ফিরছিলাম। ফেরার পথে আসামির বাড়ির সামনে আমাকে একা পেয়ে বেধড়ক মারপিট করে এই আসামিরা। সে ঘটনায় থানায় মামলা করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়ে আদালতে মামলা করি। পরবর্তীতে গত ৮ জানুয়ারি সকালে আসামিরা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আমার বাড়িতে এসে চাপ প্রয়োগ করে। সেসময় তারা বলেন, মামলা না তুলে নিলে আমাদেরকে মেরে ফেলা হবে। বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়ে উচ্ছেদ করা হবে। এরপর আমরা পুনরায় আদালতের দ্বারস্থ হয়ে এবিষয়ে আদালতে অভিযোগ দায়ের করি।
ভুক্তভোগী আরো বলেন, অভিযোগ দায়ের করার প্রেক্ষিতে আজ (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে আদালত থেকে একজন ব্যক্তি সমন নিয়ে আসামীদের বাড়িতে এসেছিল। এই সমন পাওয়ার পর আসামিরা আদালত থেকে আসা ঐ ব্যক্তির সামনে আমাদেরকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে তারা। এরপর ঐ ব্যক্তি চলে যাওয়ার পর আসামি ১.ডাবলু সরদার (৪৫) পিতা: মৃত মিরমান সরদার ২. হৃদয় আহমেদ রাব্বি (২৮) পিতা: মৃত মিরমান সরদার ৩. লাবিব আহমেদ (২২) পিতা: ডাবলু সরদার ৪. রওশন সরদার (৪৮) পিতা: বাহাদুর আলী সরদার ৫. আবু বক্কর সিদ্দিক (৪০) পিতা: ছলিমুদ্দিন মুন্সী ৬. আজগর আলী (৪০) পিতা: মৃত বাসারত সরদার ৭. গোলাম কিবরিয়া (৩২) পিতা: মৃত বাসারত সরদার সহ ১০/১২ জন আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় বাড়িতে কোন পুরুষ মানুষ না থাকায় তারা বাড়িঘরে ব্যাপক ভাংচুর চালানোর পাশাপাশি টেলিভিশন ফ্রিজ ও আসবাবপত্র ভাংচুর করে। সেসময় বাড়িতে অবস্থান করা মহিলাদেরকেও বেধড়ক মারপিট করে তারা। এতে গুরুতর আহত হন শিরিনা, ফারিয়া ও দুনিয়া নামের পরিবারের ৩ মহিলা সদস্য। তাছাড়া আসামিরা আমাদের বাড়িতে লুটপাট করে জমি কেনার জন্য রাখা ৪লক্ষ ৫০ হাজার ৭৭১ টাকা, ১ ভরি ওজনের একজোড়া স্বর্ণের রুলি বালা, ১টি ৫ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন ও ৪ আনা ওজনের একজোড়া স্বর্ণের কানের দুল নিয়ে যায়। সবমিলিয়ে ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এই ঘটনায় আহতদেরকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পাঠানো হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব বিচার চেয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হবে।
তবে এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের এক উপপরিদর্শক জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।