নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কুষ্টিয়া শহরের কলেজ মোড়স্থ ‘আমিন ডায়াগনস্টিক এন্ড মেডিকেল সার্ভিসেস’র বিরুদ্ধে ভুল আল্ট্রাসনোগ্রাফি (সনো) রিপোর্ট প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী রোগী কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আব্দালপুর ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামের কৃষক হাফিজুর রহমান (৫৪)। তিনি মুত্রথলির বৃদ্ধি ও মুত্রনালিতে পাথর জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়ে এ রিপোর্টের প্রতারণার শিকার হন বলে তার মেয়ে অভিযোগ করেন।অভিযুক্ত আমিন ডায়াগনস্টিক এন্ড মেডিকেল সার্ভিসেস’র আল্ট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্টটি সনোলজিস্ট ডা.মো. রবিউল ইসলাম তৈরি করেন বলে রিপোর্টের নিম্নে স্বাক্ষর অনুযায়ী জানা যায়। চলতি মাসের ১৮ তারিখের ওই রিপোর্টে ভুক্তভোগী রোগীর মুত্রনালিতে পাথর অনুপস্থিত। ওই রিপোর্টের ইমপ্রেশনে ১.Enlarged prostate (Gr-I) with prostatitis, 2.Cronic cystitis ডায়াগনোসিস করা হয়। এদিকে চলতি মাসের ২০ তারিখে আরেকটি মানসম্মত প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞ সনোলজিস্টের আল্ট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্ট অনুযায়ী ভুক্তভোগী রোগীর মুত্রনালিতে পাথর উপস্থিত। এবং সেটি প্রায় ২.৮৩ সেন্টিমিটার আকারের। ওই রিপোর্টের ইমপ্রেশনে ১. Suggestive of urinary tract infection with vesical calculus, 2. Mild enlarged prostrate ডায়াগনোসিস করা হয়। এই দুই সনো রিপোর্ট ছাড়াও পূর্বের সনো রিপোর্টে এই রোগের মুত্রনালিতে পাথরের উপস্থিতি সনাক্ত হয়েছিল। ভুক্তভোগী রোগীর মেয়ে প্রতিবেদককে বলেন,” আমার বাবা অনেকদিন ধরে মুত্রথলির আকার বৃদ্ধি ও মুত্রনালিতে পাথর সংক্রান্ত রোগে ভুগছিলেন। ইতোপূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এ রোগ সনাক্ত হয়েছিল। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি এ রোগের ঔষধ খাচ্ছিলেন। ঔষধের ডোজ সম্পন্ন করার পরে পাথর কি অবস্থায় আছে সেটা জানার জন্য আবার চিকিৎসকের কাছে যায়। চিকিৎসক আবার আল্ট্রাসনোগ্রাফি করার পরামর্শ দেন। তখন আমার বাবাকে নিয়ে ‘আমিন ডায়াগনস্টিক এন্ড মেডিকেল সার্ভিসেস’ এ যায়। সেখানে কাউন্টারে টাকা জমা দিয়ে সনো রুমের সামনে অপেক্ষা করার পর আমার বাবাকে সনো রুমে নিয়ে যান। আমার বাবা আগের সনো রিপোর্ট সনোলজিস্টকে দেখান। কিন্তু সনোলজিস্ট সেই রিপোর্টের গুরুত্ব না দিয়ে তড়িঘড়ি করে ২/৩ মিনিটের মধ্যেই সনো করে বের দেন। পরে রিপোর্টে দেখি পাথর নাই। এটা দেখে সন্দেহ হলে অন্য একটি ভালো ডায়াগনস্টিকে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে একজন অভিজ্ঞ সনোলজিস্টকে দিয়ে সনো করায়। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী পাথর আছ এবং আগের তুলনায় অনেক বড়ো হয়ে গেছে। এভাবে ভুল রিপোর্ট অনুযায়ী চিকিৎসা করালে রোগী তো সুস্থ না হয়ে আরও অসুস্থ হয়ে পড়বে। এমনকি এই পাথর থেকে ক্যান্সার হয়ে যেতে পারে।” তিনি এই ভুল রিপোর্টের প্রতারিত হয়েছেন বলে জানান। এবং প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।অভিযোগের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির জিএম প্রতিবেদককে মুঠোফোনে জানান, ” রোগীর মেয়ে আমাদের এখানে আসলে আমরা পুনরায় রিপোর্ট করে দিতে চেয়েছিলাম। তবে সেসময় আমি প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত ছিলাম না। আমি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজমেন্টের সাথে কথা জানাচ্ছি।”
কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন শেখ মোহাম্মদ কামাল হোসেন এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, উক্ত প্রতিষ্ঠান যদি কোন ভুল রিপোর্ট দিয়ে থাকে তবে তার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।