নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কুষ্টিয়ার স্থানীয় দৈনিক সত্যখবর পত্রিকার সম্পাদক, এশিয়ান টিভির কুষ্টিয়ার নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলাদেশ মাদক প্রতিরোধ কমিটির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি হাসিবুর রহমান রিজুর ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে চেয়েছিল হামলাকারীরা। প্রায় আধা ঘন্টা কোন উদ্ধারকারীকে পাশে ভিড়তে দেয়নি তারা। পরবর্তীতে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
বুধবার (১৯ জুন) বিকেলে সদর উপজেলার হরিপুর বাজার এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও ভাঙচুর করে হামলাকারীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্থানীয় যুবদল নেতা শিপন, মুরাদ ও রাজনের নেতৃত্বে কয়েকজন দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে রিজুর ওপর হামলা চালায়। এসময় তার শরীরের বিভিন্ন অংশে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করে হামলাকারীরা। প্রায় আধাঘণ্টা উদ্ধারকারী কাউকে পাশে আসতে দেয়নি সন্ত্রাসীরা।পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে।
রিজু ২০১৫ সাল থেকে মাদকবিরোধী আন্দোলন করে আসছে। এতে মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীরা তার উপর ক্ষিপ্ত হয়। বিভিন্ন সময় তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয় বলেও একাধিক সূত্রে জানা যায়। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল (১৯ জুন ২০২৪) এ হামলার ঘটনা ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হামলায় রিজুর দুই পা ভেঙে গেছে। বাম হাতের কবজি ভেঙে যাওয়াসহ একটি গুরুত্বপূর্ণ শিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুই হাতের আঙুলে, বুকে ও মাথায় গুরুতর জখমের চিহ্ন রয়েছে।
এদিকে, হামলার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। হামলার প্রতিবাদে ও জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে বুধবার রাত ৮টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল ও কুষ্টিয়া মডেল থানায় যৌথভাবে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাব ও কুষ্টিয়ার টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি আল মামুন সাগর, সাধারণ সম্পাদক আবু মনি জুবায়েদ রিপন ও কুষ্টিয়া টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনিসুজ্জামান ডাবলুসহ অন্যরা।
সাংবাদিক নেতারা হামলায় জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশকে ৩৬ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন। পরে থানা চত্বরে গিয়ে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস ও মিডিয়া) পলাশ কান্তি নাথ জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে তারা অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সোহেল রানা বলেন, এরই মধ্যে হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টিম অভিযান চালাচ্ছে। হামলার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এছাড়াও এই কাপুরুষোচিত হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন, বাংলাদেশ মাদক প্রতিরোধ কমিটির নেতৃবৃন্দ। নেতৃবৃন্দ হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।