Pathikrit Most Popular Online NewsPaper

    কুষ্টিয়া জেলায় ২৩ হাজার ১৫৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে

    কেন্দ্রের বাইরে অভিভাবকরা

    নিজস্ব প্রতিবেদকঃ 

    এবছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বাংলা ১ম পত্র দিয়ে শুরু হয়েছে। শিক্ষা বোর্ডের রুটিন অনুযায়ী পরীক্ষা শেষ হবে একই বছরের ১২ মার্চ। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৩ মার্চ থেকে ২০ মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।

    চলতি বছর ১১টি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। গত বছর পরীক্ষা দিয়েছিল ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ জন। সে হিসাবে এবার পরীক্ষার্থী কমেছে ৪৭ হাজার ৯৭১ জন। এরমধ্যে ছাত্র কমেছে ২৮ হাজার ৩১৯ জন এবং ছাত্রী কমেছে ১৯ হাজার ৬৫২ জন।

    এবার ২৯ হাজার ৭৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩৭০০টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছরের তুলনায় এবার পরীক্ষা কেন্দ্র কমেছে ১৮০টি এবং পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমেছে ৬৩টি।

    ইতোমধ্যে যশোর বোর্ডে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষ গ্রহণের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। পরীক্ষা আইন বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষা প্রশাসন ও সাধারণ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে থাকবেন। বিধি-নিষেধের ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

    পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. বিশ্বাস শাহীন আহম্মদ এসব তথ্য জানিয়েছেন।

    পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জানান, যশোর শিক্ষা বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী এক লাখ ৬২ হাজার ৭০০ জন। তার মধ্যে নিয়মিত এক লাখ ৪২ হাজার ৪৯২ জন ও অনিয়মিত ২০ হাজার ৮২ জন। এছাড়াও মান উন্নয়ন পরীক্ষা দেবে ১২৬ জন। এসব পরীক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছে বিজ্ঞান বিভাগে ৪১ হাজার ৬৩১ জন, মানবিক বিভাগে এক লাখ দুই হাজার ৯৫৮ জন ও ব্যবসা শিক্ষা বিভাগে ১৮ হাজার ১১১ জন।

    তিনি জানান, যশোর শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন খুলনা বিভাগের ১০ জেলার মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে খুলনা জেলায় ২৪ হাজার ১২৯ জন, বাগেরহাট জেলায় ১৩ হাজার ৯৪৭ জন, সাতক্ষীরা জেলায় ১৬ হাজার ৯৯৪ জন, কুষ্টিয়া জেলায় ২৩ হাজার ১৫৪ জন, চুয়াডাঙ্গা জেলায় ১১ হাজার ২০৪ জন, মেহেরপুর জেলায় সাত হাজার ৭৮২ জন, যশোর জেলায় ২৬ হাজার ৯০১ জন, নড়াইল জেলায় আট হাজার ২১ জন, ঝিনাইদহ জেলায় ১৯ হাজার ৪৫০ জন ও মাগুরা জেলায় ১১ হাজার ১১৮ জন।

    পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, এসএসসি পরীক্ষায় যশোর শিক্ষা বোর্ডের দুই হাজার ৫৬৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ২৯৩টি কেন্দ্রে অংশ নেবে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পরীক্ষা সম্পন্নের জন্য ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে কেন্দ্র সচিবদের নিয়ে মতবিনিময় করা হয়েছে। সেই সময়ে সব ধরনের দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পরীক্ষা আইন বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষা প্রশাসনকে সার্বিক সহযোগি করবে সাধারণ প্রশাসন। পরীক্ষা কেন্দ্র ও আশেপাশে নিয়মিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা পরিদর্শন করবেন। কোথাও আইনের লঙ্ঘন হলে সাথে সাথেই কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।

    এদিকে এসএসসি শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষা বোর্ড থেকে কিছু নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের দেয়া নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে অবশ্যই পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে। প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত সময় অনুযায়ী পরীক্ষা হবে। প্রথমে বহুনির্বাচনী ও পরে সৃজনশীল বা রচনামূলক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ও দুই পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি থাকবে না।

    নির্দেশনাগুলো হলো—

    ১. এসএসসির প্রতি বিষয়ের পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে আসন গ্রহণ করতে হবে;

    ২. প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত সময় অনুযায়ী পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে;

    ৩. প্রথমে বহুনির্বাচনী ও পরে সৃজনশীল বা রচনামূলক (তত্ত্বীয়) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। উভয় পরীক্ষার মধ্য কোনো বিরতি থাকবে না;

    ৪. পরীক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষা শুরুর তিন দিন আগে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে হবে;

    ৫. শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা এবং ক্যারিয়ার শিক্ষা বিষয়গুলোতে এনসিটিবির নির্দেশনা অনুসারে ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রাপ্ত নম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রকে সরবরাহ করবে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বরের সঙ্গে ধারাবাহিক মূল্যায়নে প্রাপ্ত নম্বর বোর্ডের ওয়েবসাইটে অনলাইনে পাঠাবেন;

    ৬. পরীক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ উত্তরপত্রের ওএমআর ফরমে তার পরীক্ষার রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড ইত্যাদি যথাযথভাবে লিখে বৃত্ত ভরাট করবে। কোনো অবস্থাতেই উত্তরপত্র ভাঁজ করা যাবে না;

    ৭. পরীক্ষার্থীদের সৃজনশীল বা রচনামূলক (তত্ত্বীয়), বহুনির্বাচনী ও ব্যবহারিক অংশে পৃথকভাবে পাস করতে হবে;

    ৮. প্রত্যেক পরীক্ষার্থী কেবল নিবন্ধনপত্রে বর্ণিত বিষয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। কোনো অবস্থাতেই ভিন্ন বিষয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না;

    ৯. কোনো পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা (সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত্বীয়), বহুনির্বাচনী ও ব্যবহারিক) নিজ বিদ্যালয়ে বা প্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠিত হবে না। পরীক্ষার্থী স্থানান্তরের মাধ্যমে আসন বিন্যাস করতে হবে;

    ১০. পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে;

    ১১. কেন্দ্রসচিব ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি বা পরীক্ষার্থী পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল আনতে এবং ব্যবহার করতে পারবে না;

    ১২. সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত্বীয়), বহুনির্বাচনি ও ব্যবহারিক পরীক্ষার পরীক্ষার্থীর উপস্থিতির জন্য একই উপস্থিতি ব্যবহার করতে হবে;

    ১৩. ব্যবহারিক পরীক্ষা নিজ নিজ কেন্দ্র বা ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে;

    ১৪. পরীক্ষার ফল প্রকাশের ৭ দিনের মধ্যে পুনঃনিরীক্ষার জন্য অনলাইনে এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।

    গত ২১ ডিসেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আবুল বাশার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে রুটিন প্রকাশ করা হয়। পূর্ণাঙ্গ পাঠ্যসূচি অনুযায়ী ২০২৪ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে পরীক্ষা চলবে দুপুর ১টা পর্যন্ত। রুটিন অনুযায়ী ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলা প্রথম পত্র, সহজ বাংলা প্রথম পত্র ; ১৮ ফেব্রুয়ারি বাংলা দ্বিতীয় পত্র, সহজ বাংলা দ্বিতীয় পত্র ; ২০ ফেব্রুয়ারি ইংরেজি প্রথম পত্র; ২২ ফেব্রুয়ারি ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র; ২৫ ফেব্রুয়ারি গণিত; ২৭ ফেব্রুয়ারি ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্ট ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা; ২৮ ফেব্রুয়ারি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি; ২৯ ফেব্রুয়ারি গার্হস্থ্য বিজ্ঞান, কৃষি শিক্ষা, আরবি, সংস্কৃত, পালি, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রিড়া, চারু ও কারুকলা; ৩ মার্চ পদার্থ বিজ্ঞান, বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং; ৫ মার্চ রসায়ন, পৌরনীতি ও নাগরিকতা, ব্যবসায় উদ্যোগ; ৬ মার্চ ভূগোল ও পরিবেশ; ৭ মার্চ জীব বিজ্ঞান, অর্থনীতি; ১০ মার্চ বিজ্ঞান, উচ্চতর গণিত; ১১ মার্চ হিসাব বিজ্ঞান; ১২ মার্চ বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

    Spread the love