ভিডিও থেকে নেওয়া ছিনতাইকারীর ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
পুকুর, নদী এবং ফসলের মাঠ থেকে লাশ উদ্ধারের ঘটনা এখন কুষ্টিয়ার জন্য মামুলি ব্যাপার। এর সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে চুরি ও ছিনতাইয়ের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা। সংস্কৃতির এই রাজধানী যেনো অপরাধের এক স্বর্গরাজ্য! দৌলতপুরে মেহগনি বাগান থেকে স্কুল ছাত্রের গলাকাটা লাশ উদ্ধারের ঘটনার রেশ এখনো কাটেইনি। অথচ এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলো হাটশ-হরিপুরে প্রকাশ্য দিবালোকে ছিনতাইয়ের ঘটনা। ভাইরাল ভিডিয়োতে দুইজন ছিনতাইকারীর চেহারা দৃশ্যমান হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনের আওতায় আনার কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
ভাইরাল হওয়া ১ মিনিট ৩১ সেকেন্ডের ওই ভিডিয়োতে দেখা যায়, কয়েকজন সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী পদ্মা-গড়াই মোহনায় বেড়াতে আসা এক তরুণীকে মারার হুমকি দিয়ে গায়ের গহনা খুলে দিতে বাধ্য করছেন। এসময় ওই তরুণী কাকুতি মিনতি করলে তাকে বেশি কথা বলা ভালো নয় বলে ধমক দিচ্ছেন এবং যা বলেছেন তা দ্রুত করতে বলছেন। অন্যথায় তাঁদের মারবেন বলে হুমকি দিচ্ছেন। তরুণী ভয়ে ভয়ে তাঁর দুই কানের দুল খুলে দেওয়ার পরে তাঁর ব্যবহৃত ঘড়ি ও পার্চে থাকা টাকাও ছিনতাইকারীরা জোরপূর্বক নিয়ে নেন। ওই ভিডিয়োতে দুইজন ছিনতাইকারীর চেহারা স্পষ্ট দৃশ্যমান হয়। ছিনতাইকারী দুইজন হলেন, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ-হরিপুর ইউনিয়নের বোয়ালদহ গ্রামের জামুর ছেলে জাকির (৩০) ও শালদহ গ্রামের হেদায়েতের ছেলে সুমন (৩২)। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এই ছিনতাইকারীদের একটি সংঘবদ্ধ বড়ো দল রয়েছে। তারা নিয়মিতভাবে চুরি, ছিনতাই ও মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকে। এছাড়াও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, এই চক্রের সঙ্গে ১৫/২০ জন সদস্য রয়েছে।
এদিকে ভিডিয়োটি ছড়িয়ে পড়ার পর পরই এ নিয়ে শহর ও গ্রামের সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। ব্যস্ততম শহরের পাশে অবস্থিত ও পর্যটন সম্ভাবনাময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ পদ্মা-গড়াই মোহনা ও নদীর তীর এখন অপরাধের স্বর্গরাজ্য। এছাড়াও ভিডিয়োতে দৃশ্যমান ছিনতাইকারীরা আইনের আওতায় না আসায় চরম উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করেন সাধারণ নাগরিক সমাজ। এমন অপ্রীতিকর ঘটনা প্রকাশ্য দিবালোকে ঘটে থাকলে ঘর থেকে বের হওয়া নিরাপদ হবে না বলে মন্তব্য করেন তাঁরা। এছাড়াও তাঁরা অতিদ্রুত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এবিষয়ে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান।
এবিষয়ে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ও অপরাধ) পলাশ কান্তি নাথ এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা এমন একটি তথ্য পেয়েছি। এবং কেউ কোন অভিযোগ করেনি বা জানায়নি। তারপরেও আমরা নিজের জায়গা থেকে কারা কারা থাকতে পারে এবং কয়েকজনের নামও আমরা পেয়েছি। বিষয়টি আমরা দেখছি।