নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কুষ্টিয়ায় বাংলাদেশের সরকারি টেলিফোন সংস্থা ও বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড বা বিটিসিএল এর জায়গা দখল করে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর পুত্রের বিরুদ্ধে ধান চাষ করার অভিযোগ উঠেছে। এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন বিটিসিএল এর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
জানা যায়, কুষ্টিয়া শহরের আড়ুয়াপাড়া এলাকায় ছোট ওয়্যারলেস নামে পরিচিত স্থানে বিটিসিএল এর কর্মচারীদের বসবাসের জন্য কোয়ার্টার রয়েছে। সেখানে বিটিসিএল এ কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বসবাস করেন। কিন্তু স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর পুত্র হাসিব কোরাইশী ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বিটিসিএল’র সেই সরকারি জায়গা দখল করে ধানের চাষ করেছেন। এবিষয়ে বিটিসিএল কুষ্টিয়ার ডিজিএম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এছাড়াও বিটিসিএল কোয়ার্টারে বসবাসরত কর্মচারীরা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিতভাবে অভিযোগ জানানোর খবর পাওয়া গেছে। তাছাড়াও সেখানে বসবাসরতরা ভীতিকর পরিস্থিতিতে দিনাতিপাত করছে বলে জানা যায়।
সরজমিনে দেখা যায়, বিটিসিএল কোয়ার্টারের প্রাচীরের ভেতরে বেশকিছু জায়গায় ধান লাগানো হয়েছে। যাতায়াতের জন্য কোয়ার্টারের সীমানা প্রাচীর ভেঙে কুষ্টিয়া পৌরসভার ১১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনিছ কোরাইশীর বাড়ির ভেতর দিয়ে ফটক তৈরি করা রয়েছে। এছাড়াও কোয়ার্টারের পরিত্যক্ত ভবনে নিয়মিত মাদক সেবনের নমুনা পাওয়া গিয়েছে।
কোয়ার্টারে বসবাসরতরা জানান, স্থানীয় কাউন্সিলর আনিছ কোরাইসীর ছেলে হাসিব কোরাইশী ও দলিলের ছেলে অনিক ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বিটিসিএল এর সরকারি জায়গা দখল করে ধান চাষ করেছে। আমাদের কোয়ার্টারের গাছের ফল পাড়তেও নিষধ করেছে। এছাড়াও আমাদের এখানে যে পুকুর রয়েছে সেই পুকুরে আমরা মাছ চাষ করতে গেলে কে বা কারা পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে মাছ মেরে ফেলে। আমরা কিছু বলতে গেলে ক্ষমতাসীন দলের এক প্রভাবশালী নেতার কথা বলে আমাদের ভয়ভীতি দেখায়। কয়েকদিন আগে তারা আমাদের মেয়েদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে গেছে। আমরা বিষয়টি আমাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। তিনি থানায় অভিযোগ করেছেন।
এবিষয়ে অভিযুক্ত হাসিব কোরাইশীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এই জমিতে দলিল নামের একজন চাষাবাদ করে। কয়েক বছর সে অসুস্থ থাকায় চাষাবাদ করতে পারেনি। এখন তার ছেলে এই জমি চাষ করছে। এবিষয়ে গতকাল (রবিবার) কুষ্টিয়া সদর থানায় বসাবসি হয়েছিল। এবার ধান লাগিয়ে ফেলেছে। এরপর আর লাগাবে না। সীমানা প্রাচীর ভেঙে ফটক তৈরি করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই গেট করা হয় ১৯৯৭/১৯৯৮ সালের দিকে। আমি কোন দখলদারিত্বের সাথে জড়িত না। আমাকে রাজনৈতিকভাবে ফাঁসানো হচ্ছে।
এবিষয়ে বিটিসিএল এর উপ-মহাব্যবস্থাপক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) কুষ্টিয়া, নারায়ণ চন্দ্র ঘরামীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এই দখলদারিত্বের বিষয়ে জানতে পেরে ২৫ জানুয়ারি থানায় অভিযোগ করেছিলাম। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে। এছাড়াও পরবর্তীতে আমি বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানাবো।