কুষ্টিয়া অফিসঃ
কুষ্টিয়া চিনিকল আধুনিকায়ন, রক্ষা ও আখ মাড়াই চালুর দাবীতে গঠিত “কুষ্টিয়া সুগার মিল আধুনিকায়ন ও রক্ষা কমিটি” এর আয়োজনে ১২ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) বিকাল ৪টায় কুষ্টিয়া সুগার মিলের দক্ষিণে জগতি বিআইডিসি বাজারে লিফলেট বিতরণ ও পথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিআইডিসির বাজারে লিফলেট বিতরণের পর চৌরাস্তার মোরের উপরে পথসভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
কুষ্টিয়া সুগার মিল আধুনিকায়ন ও রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক শ্রমিকনেতা রোকনুজ্জামান রোকনের সভাপতিত্বে ও কমিটির সদস্য সচিব আবু মনি সাকলায়েন এলিনের সঞ্চালনায় পথসভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত পথ সভায় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রতিনিধি, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক প্রতিনিধি ও বাম প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল ও তাদের শ্রমিক সংগঠনসহ আখ চাষি, স্থানীয় ব্যাক্তিবগ ও ব্যবসায়ীরা। উক্ত পথসভায় বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক জনাব নূর উদ্দিন, বাসর কুষ্টিয়া জেলা শাখার আহ্বায়ক শফিউর রহমান শফি, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মীর নাজমুল ইসলাম শাহিন, জাতীয় গণফ্রণ্টের কেন্দ্রীয় নেতা মকলেচুর রহমান দুলাল, বাসদ নেতা আশরাফুল ইসলাম, জাতীয় গণফ্রন্টের সমন্বয়ক সত্য বিশ্বাস, কুষ্টিয়া সুগার মিল আধুনিকায়ন ও রক্ষা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক বাপ্পি আহমেদ সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
বক্তারা কুষ্টিয়া সুগার মিল আধুনিকায়ন করে আঁখ মাড়াই কার্যক্রম চালুর দাবি জানান। শুধু কুষ্টিয়া সুগার মিল নয় সারা বাংলাদেশের বন্ধ সুগার মিল গুলো চালু করে দেশের চিনি আমদানি কমানো ও দেশের সম্পদ রক্ষার পরামর্শ দেন। এছাড়াও বক্তারা বলেন, বর্তমানে যে হারে চিনির দাম বেড়েছে এতে সরকার যদি মিলটির আঁখ মাড়াই পুনরায় চালু করে তবে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা আয় করা সম্ভব হবে এই মিল থেকে। সেই সাথে এখানকার অর্থনীতি ও সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে বলে তারা আশা ব্যক্ত করেন। সেই সাথে কুষ্টিয়া সুগার মিল আধুনিকায়ন ও রক্ষা কমিটিকে ধন্যবাদ জানান এমন একটি আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য এবং সার্বিক সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন বক্তারা।
উক্ত পথসভাটি পরিচালনায় সহযোগিতা করেন কুষ্টিয়া চিনিকল আধুনিকায়ন ও রক্ষা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সাজেদুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, ২১৬ একর জমিতে প্রতিষ্ঠিত হয় কুষ্টিয়া সুগার মিল। ১৯৬১ সালে মাত্র আট কিলোমিটার দূরে কুষ্টিয়া শহর থেকে জগতি এলাকায় কুষ্টিয়া সুগার মিল এর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ১৯৬৫-৬৬ মৌসুম থেকে কারখানায় চিনি উৎপাদন শুরু হয়। বাংলাদেশ সরকার ১৯৭২ সালে চিনিকলটিকে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা করে। কিন্তু আকর্ষিক মিলটির আখ মাড়াই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ধ্বংসের মুখে রয়েছে যন্তাংশ সহ বিভিন্ন ধরনের সম্পদ। তবে সরকারি নির্দেশনা পেলে আবারও মিলটির কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হবে বলে জানায় কুষ্টিয়া সুগার মিলের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী।