নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
কুষ্টিয়া পৌরসভার ১৮নং ওয়ার্ডের উদিবাড়ী সর্দারপাড়া এলাকার দুই শতাধিক পরিবার একটু বৃষ্টি হলেই পানিবন্দি হয়ে পড়ে। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্য তথ্য। এই এলাকার কিছু প্রভাবশালী মানুষ পানি নিষ্কাশনের ছোট ক্যানাল দখল করে বাড়ি ও প্রাচীর নির্মাণ করে বন্ধ করে দিয়েছে। এরপর থেকে একটু বৃষ্টি হলেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। পার করতে হয় মানবেতর জীবনযাপন।
সূত্রে জানা যায়, ১৮৬৯ সালের ১ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয় কুষ্টিয়া পৌরসভা। শুরুতে পৌরসভা আয়তন ছিল বর্তমানের চাইতে প্রায় দ্বিগুন। মজমপুর, বাড়াদী, মঙ্গলবাড়িয়া, হরেকৃষ্ণপুর, কমলাপুর, উদিবাড়ী, জগতি, চৌড়হাস, আড়ুয়াপাড়া ও বাহাদুরখালী গ্রাম সমন্বয়ে গঠিত হয়েছিল কুষ্টিয়া পৌরসভা। পরবর্তীকালে (প্রায় দুদশক পর) মঙ্গলবাড়িয়া, হরেকৃষ্ণপুর, উদিবাড়ী, বাড়াদী, জগতি, চৌড়হাস ও মজমপুরের অংশবিশেষ লোকাল বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় কুষ্টিয়া পৌরসভা আয়তনে ছোট হয়ে যায়। এর প্রায় একশ বছর পর (১৯৮১) পৌরএলাকা আবার সম্প্রসারিত হয়। যুক্ত হয় উত্তর লাহিনী, হরিশংকরপুর, কালিশংকরপুর, হাউজিং এষ্টেট এবং চৌড়হাস অংশবিশেষ।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে মজমপুর ইউনিয়নটি কুষ্টিয়া পৌরসভা আয়তন বাড়ানোর সময় বিলুপ্ত হয়ে যায়। উদিবাড়ী এর আগে মজমপুর ইউনিয়নের মধ্যে ছিল। এই এলাকা পৌরসভার মধ্যে আসা ৯ বছর হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত পৌর সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। হয়নি রাস্তা, নেই রোড লাইট, নেই ড্রেনেজ ব্যবস্থা এমনকি ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করতে নেওয়া হয়না ব্যবস্থা। তবে অতিরিক্ত পৌর কর ঠিকই নিচ্ছে পৌরসভা। এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য একমাত্র খাল দখল করে নিয়েছে কয়েকজন দখলদার। এবিষয়েও নেই পৌর কর্তৃপক্ষের মাথাব্যথা। গত কয়েকদিন ধরে ভারি বৃষ্টিপাতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, আবাসিক এলাকায় পানি নিষ্কাশনের ছোট ক্যানাল দখল করে হক্কা গুলের কারখানা নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও পলাশ টেইলার্সসহ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি সরকারি ছোট ক্যানাল দখল করে বন্ধ করে দিয়েছে। এদের জন্য এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এবিষয়ে হক্কা গুল কারখানার ম্যানেজার রব্বানির মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি পাইপ দিয়ে রেখেছি। পৌরসভা চাইলে আমরা ক্যানালের জায়গা ছেড়ে দেবো। ১৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহ্ জালাল এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ছোট ক্যানালের জায়গা দখলের কথা স্বীকার করে বলেন, হক্কা গুলের মালিক মুন্না ক্ষমতা দেখিয়ে ক্যানাল দখল করে একটা পাইপ দিয়ে রেখেছে। তাদের বলতে গেলে ক্ষমতা দেখায়। আমি আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর মাসিক মিটিংয়ে বিষয়টি তুলবো। এই সব দখলদারদের জন্য এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এই এলাকার কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থা নাই। তেমন কোন রাস্তাঘাটও নির্মাণ করা হয়নি। এখানকার মানুষ অবহেলিত। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক শারমিন আখতার বলেন, আমি বিষয়টি জেনে ব্যবস্থা নিবো।