Pathikrit Most Popular Online NewsPaper

    কুমারখালীর চৌরঙ্গী মাধ্যমিক বিদ্যালয়

    ধারাবাহিক প্রতিবেদনের ১ম পর্ব

    কুষ্টিয়া অফিস।।

    কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চৌরঙ্গী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ে নিয়োগ দেওয়ার প্রলোভনে একাধিক ব্যক্তির নিকট থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ঐ প্রধান শিক্ষকের নাম শেখ রেজাউল করিম মিলন।

    শেখ রেজাউল করিম মিলনের ফাইল ফটো

    চৌরঙ্গী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এই প্রধান শিক্ষক শেখ রেজাউল করিম মিলন বিদ্যালয়ে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে কুমারখালী উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের বড় ভালুকা গ্রামের মৃত রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে আবু সায়েম টমাসের থেকে ১০ লক্ষ টাকা, চৌরঙ্গীর সঞ্জয় নামক এক ব্যক্তির থেকে ১২ লক্ষ টাকা সহ ১০/১২ জনের কাছ থেকে আনুমানিক দেড় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে গত ১লা অক্টোবর ২০২৩ তারিখে আবু সায়েম টমাস কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

    অভিযোগের বরাত দিয়ে জানা যায়, চৌরঙ্গী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ রেজাউল করিম মিলন পান্টি এলাকার বাসিন্দা টমাসকে সহকারী শিক্ষক পদে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভনে গত ২ বছর পূর্বে পর্যায়ক্রমে ২০ জুলাই ২০২১ তারিখে ২ লক্ষ টাকা, ২৫ জুলাই ২০২১ তারিখে ২ লক্ষ টাকা, ৪ আগষ্ট ২০২১ তারিখে ২লক্ষ টাকা, ২০ আগষ্ট ২০২১ তারিখে ২লক্ষ টাকা ও ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে ২লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন। তখন মিলন স্যার প্রতিশ্রুতি দেয় যে, কিছু দিনের মধ্যেই নিয়োগ ও এমপিও ভুক্ত করে দেবেন। কিন্তু বেশ কয়েক বছর অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পরেও মিলন স্যার টমাসকে উক্ত পদের জন্য নিয়োগ ও এমপিও ভুক্ত করে দেননি। টমাস বারংবার মিলন স্যারকে চাকুরীর নিয়োগ ও এমপিও ভুক্ত করে দিতে বললেও মিলন স্যার আজ দেবে কাল দেবে বলে দিনের পর দিন ঘুরাতে থাকে। মিলন স্যার আজও কথা রাখেননি এবং প্রলোভন দেখিয়ে নেওয়া টাকাও ফেরত দেননি।

    আরো জানা যায়, গত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ইং তারিখ অনুমানিক বিকাল ৫ টার সময় চৌরঙ্গী বাজার প্রাইমারী স্কুলের সামনে টমাসকে দেখা করার কথা বলেন মিলন স্যার। টমাস সেখানে মিলন স্যারের সাথে সাক্ষাত করে টাকা চাইলে মিলন স্যার তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ মারধর করে এবং জীবননাশের হুমকি দেয়। একপর্যায়ে মিলন স্যার টমাসকে টাকা ফেরত দেবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন। মিলন স্যারের ভয়ে টমাস নিরবে সেখান থেকে চলে আসেন এবং পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর মিলন স্যারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তদন্তের জন্য ৮ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে চৌরঙ্গী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ রেজাউল করিম মিলনকে সকাল সাড়ে ১০টার সাময় ইউএনও অফিসে তলব করেন। যার স্মারক নং-০৫.৪৪.৫০৭১.০১৩.০০.০২৩.২৩.১০৪১, তারিখ ২ নভেম্বর ২০২৩ইং। তবে তিনি অসুস্থতার অজুহাতে উপস্থিত হননি।

    সরজমিনে চৌরঙ্গী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে জানা যায়, তিনি ৬ নভেম্বর ২০২৩ তারিখ থেকে চিকিৎসার জন্য ছুটি নিয়েছেন। ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেননি। এরপর শেখ রেজাউল করিম মিলনের বাড়িতে গিয়ে তাকে না পেয়ে তার ফুপুর সাথে কথা হয়। তার ফুপু জানান, মিলন সুস্থ। সে স্কুলের কাজে কুমারখালী গিয়েছেন।

    অন্যদিকে, শেখ রেজাউল করিম মিলনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে তিনি ফোন দিয়ে বলেন, আমার কাছে কেউ টাকা পাবে না। পেলে প্রমান দেখাক। আর আপনি আমার বাড়িতে কেন গিয়েছেন? বলে ফোন কেটে দেন তিনি।

    বিষয়টি নিয়ে কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিতান কুমার মন্ডল’র মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগের শুনানির সময় চৌরঙ্গী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ রেজাউল করিম মিলনকে পাওয়া যায়নি। তিনি অসুস্থতার কথা বলে সময় চেয়েছিলেন। সেটা নামঞ্জুর করা হয়েছে। আমরা প্রয়োজনে সরজমিন তদন্ত করবো।অভিযোগের বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টকে অবহিত করবো।

    Spread the love