কুষ্টিয়া অফিসঃ
কুষ্টিয়া শহরে বিদুৎ উন্নয়ন বিতরন বিভাগে গ্রিড লাইনে বন্ধ না করে কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঝলসে গেছে এক বেসরকারি শ্রমিকের শরীর। তাকে প্রথমে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া সদর হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।
গত বুধবার সকালে কোন নিরাপত্তা পোশাক ছাড়া বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ওঠে বেসরকারি শ্রমিক আবু বক্কর সিদ্দিক (৫০)। এরপর ঘটে মারাত্মক দুর্ঘটনা। সঙ্গে সঙ্গে অন্য শ্রমিকরা টের পেয়ে দ্রুত আবু বক্কর সিদ্দিকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত ঢাকা মেডিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠান হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডাক্তার।
আবু বক্কর সিদ্দিক কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার জয়নাবাদ গ্রামের রহমতের ছেলে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন জানান, এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে লাইন মেরামতের কাজ করছিলেন বক্কর সহ দুই লাইনম্যান। বিদ্যুৎপোল এর উপরে উঠে বক্কর কাজ করছিলেন। বিদ্যুৎপোলের নিচে ছিলেন তার দুই সহকর্মী। বক্করের কোমরে ছিল না সেফটি বেল্ট , হাতে ছিল না গ্লোবস, নিম্নমানের দড়ি কোমরে বেঁধে বাঁশের মইয়ের উপরে উঠে বৈদ্যুতিক পোলে কাজ করছিল। মূল সাব স্টেশন থেকে হঠাৎ বিদ্যুৎ চালু হয়ে গেলে বক্কর বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। তার শরীরের অনেক অংশ পুড়ে যায় এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলে বিদ্যুৎপোলের উপর ঝুলতে থাকে। পরে তাঁকে তার সহকর্মীরা দ্রুত উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।
জানা যায়, কুষ্টিয়া আনিচুর রহমান ট্রেডাস নামের একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজটি করে। প্রান্ত ও মামুন নামের দুইজন সুপার দেখাশোনা করছিল। ওরা অফিস থেকে ক্লিয়ারেন্স নিয়েই তারপরে বৈদ্যুতিক কাজ করে। মামুনের সাথে একাধিক বার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
কল কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শন ফরহাদ ওহাবের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, শ্রমিকের অনেক অধিকার রয়েছে। এসব কাজ করতে গেলে অনেক ধারা বিধি রয়েছে যেগুলো মেনে চলতে হয়। আপনি এক সময় অফিসে আছেন এগুলো বিষয়ে বিস্তারিত কথা হবে।
কল কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের ইন্সপেক্টর ইসতিয়াক আহমদ বলেন, বৈদ্যুতিক লাইনের কাজ করা শ্রমিক গুলোকে সেফটি বেল্ট, জুতা, উচ্চ মানের গ্রোপস, মাথায় হেলমেট অবশ্যিক থাকতে হবে। যে আজকে বিদ্যুৎ স্পষ্ট হয়েছে ঠিকাদার কাজ করলে তার দায়ভার সম্পূর্ণই ঠিকাদারকে নিতে হবে।
কুষ্টিয়া ওজপাডিকো’র নির্বাহী প্রকৌশলী এস.এম. ফজলে রাব্বি বলেন, ওদেরকে প্রোপার সেফটি টু সবসময় কাছে রাখতে বলা হয়েছে। প্রতিদিন তো আর বলা সম্ভব না। এই ঘটনার তদন্ত করা হবে। তদন্তে কোন ব্যক্তি বা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কোন অনিয়ম ও অবহেলা পেলে তাদের বিরুদ্ধে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তিনি আরো বলেন, উনারা কুষ্টিয়ার-ই, জয়েন্টভেন্চারে কাজ করে।