Pathikrit Most Popular Online NewsPaper

    ছবি: পথিকৃৎ

    নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

    কুষ্টিয়া শহরের প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক নবাব সিরাজউদ্দৌলা সড়ক। সংক্ষেপে সড়কটিকে বলা হয়ে থাকে এনএস রোড। কয়েক বছর আগে শহরের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য সড়কের মাঝ দিয়ে সড়ক বিভাজক (সড়কদ্বীপ) নির্মাণ করে কুষ্টিয়া পৌরসভা। এই সড়ক বিভাজকের উপরে স্থাপন করা হয় বিদেশ থেকে আনা ল্যাম্পপোস্ট ও রঙিন বাতি। সেই সাথে বিভাজকের মাঝ দিয়ে লাগানো হয় বাহারি সব ফুলের গাছ। 

    যে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য এত কিছু সেই সৌন্দর্য বিনষ্ট করতে শহর জুড়ে ল্যাম্পপোস্টের সাথে লাগানো হয়েছে বাহারি রঙের ফেস্টুন। পৌরসভার স্বয়ং প্যানেল মেয়র তার নিজ নাম সম্বলিত ঈদ শুভেচ্ছা ব্যানার শহর জুড়ে ল্যাম্পপোস্টের সাথে লাগিয়েছেন। ল্যাম্পপোস্টের সাথে ব্যানার/ফেস্টুন লাগানো যাবে না মর্মে পৌরসভার পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও খোদ পৌরসভার প্যানেল মেয়র নিজেই মানছেন না সেই নিষেধাজ্ঞা। নষ্ট হচ্ছে শহরের সৌন্দর্য। রাতের বেলায় সড়কে দেখা দিয়েছে আলোকস্বল্পতা।

    শহরে চলাচলকারী পথচারীরা জানান, পৌর মেয়রের আদেশ অগ্রাহ্য করে প্যানেল মেয়র শাহিন উদ্দিন ঈদ শুভেচ্ছা ফেস্টুন লাগিয়েছেন। প্যানেল মেয়র নিজেই যদি মেয়রের আদেশ না মানেন তাহলে অন্যদের মানাবেন কেমন করে!

    সরেজমিনে শহর ঘুরে দেখা যায়, শহরের মজমপুর মোড় থেকে সিঙ্গারমোড় পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার চার লেন সড়কের প্রতিটি সড়কবাতির খুঁটিতে লাগানো হয়েছে বড় বড় ফেস্টুন। ফেস্টুন সবই কুষ্টিয়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র শাহিন উদ্দিনের। ল্যাম্পপোস্ট জুড়ে ফেস্টুন লাগানোর ফলে শহরের সৌন্দর্যহানি হওয়ার পাশাপাশি রাতের সড়কে আলোকস্বল্পতাও দেখা দিয়েছে। ফলে তৈরি হচ্ছে দুর্ঘটনার শঙ্কা। এ নিয়ে পৌরবাসীদের ক্ষোভ থাকলেও কিছু বলতে পারছেন না তারা।

    কুষ্টিয়া পৌর কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলা শহরের কুষ্টিয়া মজমপুর থেকে সিঙ্গারমোড় পর্যন্ত সড়ক বিভাজক (সড়কদ্বীপ) নির্মাণ করা হয় প্রায় ৩ বছর আগে। সড়ক বিভাজকে দুই শতাধিক সড়কবাতির খুঁটি স্থাপন করা ও সৌন্দর্যবর্ধক বিভিন্ন ফুলের গাছ লাগানো হয়।

    কুষ্টিয়া পৌরসভার তথ্যমতে, তৃতীয় নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের (ইউজিআইআইডি-৩) আওতায় কুষ্টিয়া পৌরসভার এলাকায় বেশ কিছু উন্নয়নকাজ করা হয়। এর অংশ হিসেবে সড়ক বিভাজকের মাঝে শোভাবর্ধক গাছ রোপণ ও গার্ডেন লাইট বা বাগান বাতি স্থাপন করা হয়। 

    বিষয়টি নিয়ে কুষ্টিয়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র শাহিন উদ্দিন এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখানে সবাই লাগই তাই আমিও লাগিয়েছি। যার যখন দরকার হয় সে তখন ফেস্টুন লাগাই। পৌরসভা নির্দিষ্ট সময়ে ফেস্টুন খুলে নিয়ে যায়।

    প্রসঙ্গে কুষ্টিয়া পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাহামুদ রেজা চৌধুরীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এর আগেও অনেকেই লাগিয়েছিল। এগুলো লাগানো ঠিক না। উনি প্যানেল মেয়র এগুলো লাগালে আমরা কিছু বলতে পারিনা। আইন কি সবার জন্য সমান নয়? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সবসময় আইন প্রয়োগ করে কোন কিছু হয় না।

    কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এভাবে ফেস্টুন লাগালে শহরের সৌন্দর্য বিনষ্ট হয়। বারবার নিষেধ করা সত্বেও মানুষ এগুলো শোনে না। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে ম্যাজিস্ট্রেট চেয়েছি কিন্তু তেমন কোন সাড়া পায়নি।

    এদিকে অহেতুক ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ডের কারণে শহরের সৌন্দর্য ম্নান হয়ে পড়েছে তাই দ্রুত ফেস্টুন অপসারণ করে সৌন্দর্য রক্ষার দাবি জানিয়েছেন পৌরবাসীরা।

    Spread the love