নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কুষ্টিয়া শহরের থানাপাড়ার ৩৯, আরএ খান রোডের ফায়ার সার্ভিসের পেছনে সুউচ্চ আবাসিক ভবনে অবস্থিত অভিজাত খেয়া রেস্তোরাঁয় নেই ফায়ার লাইসেন্স। অবকাঠামোগত শর্ত পূরণ না হওয়ায় খেঁয়া রেস্তোরাঁকে ফায়ার লাইসেন্স প্রদান করার কোনো সুযোগ নেই বলে ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়। সুতরাং কোন কারণে এই ভবনে আগুন লাগলে হতাহতের পরিমাণ হতে পারে অপ্রত্যাশিত সংখ্যক। দীর্ঘদিন ধরে বেআইনিভাবে চলে আসলেও এই প্রতিষ্ঠান মালিক। এই প্রতিষ্ঠানের মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। এছাড়াও সনো হাসপাতালেও ফায়ার লাইসেন্স নেই বলে ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়। তবে সনো ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ফায়ার লাইসেন্স আছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, খেঁয়া রেস্তোরাঁতে কিছু সংখ্যক অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র থাকলেও জরুরি বহিঃগমন সিঁড়ি নেই। নিজস্ব ফায়ার ফাইটিং টিম, হাইড্রেন্ট পাম্প নেই। নিয়মিত ইভাকেশন ড্রিল করানো হয় না বলে জানা যায়।
তাছাড়া এই রেস্তোরাঁটি সুউচ্চ আবাসিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত। এখানে সুউচ্চ ভবনে ফায়ার লাইসেন্সের কোনো শর্ত মানা হয় না।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সূত্রে জানা যায়, দশ তলা বা সুউচ্চ ভবনে নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, নিজস্ব হাইড্রেন্ট পাম্প, পর্যাপ্ত জরুরি বহিঃগমন সিঁড়ি, নিজস্ব ফায়ার ফাইটিং টিম, নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ও সেখান থেকে জরুরি বার্তা প্রেরণের ব্যবস্থা, নিয়মিত প্রতিমাসে ইভাকেশন ড্রিল করা, প্রতি তিন মাস অন্তর নিবন্ধিত ইলেক্ট্রিশিয়ান দ্বারা বিদ্যুৎ লাইন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রেজিস্ট্রার করে রাখার শর্তে ফায়ার লাইসেন্স প্রদান করা হয়। সনো ডায়গনিস্টিকের ফায়ার লাইসেন্স থাকলেও লাইসেন্স নেয়নি সনো হাসপাতালের। খেঁয়া রেস্তোরাঁ সুউচ্চ দশ তলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত। এই রেস্তোরাঁয়ও নেই ফায়ার লাইসেন্স। ফায়ার লাইসেন্সের কোনো শর্ত তারা মানেন না তারা। ফলে খেঁয়া রেস্তোরাঁকে ফায়ার লাইসেন্স প্রদান করা হয়নি। এমনকি তাকে ফায়ার লাইসেন্স প্রদান করা সম্ভবও না। এই ভবনে আগুন লাগলে অগণিত সংখ্যক হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে। কুষ্টিয়াতেও দেখা যেতে পারে বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই ট্রাজেডি! একাধিক সূত্রে জানা যায়, সনো হাসপাতাল ও খেঁয়া রেস্তোরাঁ মালিক ও তাদের ছত্রছায়া প্রদানকারী ব্যক্তিরা অত্যন্ত প্রভাবশালী। তারা মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা করলেও তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায় না। এখনও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না-কি সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে কাবাব বানিয়ে ব্যবসা করা হবে সে বিষয়েও রয়েছে অনিশ্চয়তা।
কুষ্টিয়া সিভিল ডিফেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক জনাব জানে আলম বলেন, খেঁয়া রেস্তোরাঁ সুউচ্চ আবাসিক ভবনে অবস্থিত হওয়ায় তাদের ফায়ার লাইসেন্স প্রদান করা হয়নি। সুউচ্চ ভবনে ফায়ার লাইসেন্সের শর্ত পূরণ না করাই খেঁয়া রেস্তোরাঁকে ফায়ার লাইসেন্স প্রদান করা সম্ভবও না। এছাড়াও এই ভবনটি অত্যন্ত অগ্নি ঝুঁকিতে রয়েছে। এখানে আগুন লাগলে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে যারা এখন পর্যন্ত ফায়ার লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করছেন তাদের একাধিকবার নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। আমাদের নিজস্ব কোন ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে পারিনা।
এব্যাপারে খেঁয়া রেস্তোরাঁর দুই অংশীদার বিশ্বনাথ সাহা বিশু ও অজয় সুরেকার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, আমাদের ফায়ার লাইসেন্স আছে। তবে ফায়ার সার্ভিস এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আপনাদের প্রতিষ্ঠানে কোন ফায়ার লাইসেন্স নেই তখন তারা ম্যানেজারের সাথে কথা বলতে বলেন।
খেঁয়া রেস্তোরাঁর ম্যানেজার সাইদুল বারী টুটুল এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানে ফায়ার সেফটির জন্য ইসটিংগুইসার রয়েছে । তবে ফায়ার লাইসেন্স এর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি এখন ডাক্তারের কাছে রয়েছি। এবিষয়ে পরে কথা বলব।