কুষ্টিয়া অফিসঃ কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একটি ভোটকেন্দ্রে প্রতিপক্ষের হামলায় তিনজন আহত হয়েছেন। সোমবার (২১ মে) বিকেল ৪টার দিকে জয়নাবাদ কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। আহত অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা হলেন কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের জয়নাবাদ গ্রামের মন্ডলপাড়ার গোলাম মোস্তফার ছেলে তারিক আলী (৪০), একই এলাকার নাজিম উদ্দীনের ছেলে নাজিরুল ইসলাম (৪২) ও মৃত আকরাম আলীর ছেলে রাশেদ আলী (৪৫)। তারা আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল মান্নান খানের কর্মী ও সমর্থক। মান্নান খান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দুইবারের উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান।
অভিযুক্তরা মোটরসাইকেল প্রতীকে প্রার্থী গোলাম জিলানী পিটারের সমর্থক ও কর্মী। তিনি সাবেক এমপি বেগম সুলতানা তরুণের ছেলে। তার দাদা গোলাম কিবরিয়াও সংসদ সদস্য ছিলেন। সদ্য সাবেক এমপি সেলিম আলতাফ জর্জের চাচাতো ভাই।
আহত নাজরুল ইসলাম বলেন, আমরা মান্নান খানের লোক। আর যারা সন্ত্রাসী হামলা করে আমাদের গুরুতর আহত করেছেন তারা পিটারের লোক। ভোটকেন্দ্রের সামনে তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছিল। এ সময় তাদের শান্ত হতে বলেন আমাদের লোকজন। বিশৃঙ্খলা বন্ধ করতে বলার কারণে লাল, মধু, আজিজুলসহ প্রায় ১০-১৫ জন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের লোকজনদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা আমাদের উপর এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও মারপিট করে জখম করে।
চাপড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রিপন মন্ডল বলেন, আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মান্নান খানের কর্মী ও সমর্থকদের উপর সন্ত্রাসী হামলা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী পিটারের সমর্থক ও কর্মী লাল, মধু, আজিজুলসহ প্রায় ১০-১৫ জন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা করে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন তিনজন।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সুতপা রায় বলেন, আহত অবস্থায় তিনজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তারা চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অভিযুক্তদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তারা ধরেনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমারখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম আকিব। তিনি বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় কয়েকজন আহত হয়েছেন। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অপ্রীতিকর যে কোনো ঘটনা প্রতিরোধে পুলিশ কাজ করছে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৮৬ হাজার ৮২৯ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৪১ হাজার ৮৩১ জন, পুরুষ ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯৯৫ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে মাত্র ৩ জন। তার বিপরীতে চেয়ারম্যান পদে দুই জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনজন।