Pathikrit Most Popular Online NewsPaper

    ছবি: পথিকৃৎ

    নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

    কুষ্টিয়া লাহিনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন সরিয়ে নিতে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের নোটিশ প্রদান করেছেন।
    এদিকে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের আদেশে লাহিনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সেমিপাকা ভবন অপসারণ ও ভবনের জমির প্লট বরাদ্দ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
    বুধবার সকালে ঢাকা-কুষ্টিয়া মহাসড়কের লাহিনী বটতলা এলাকায় উক্ত মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
    জানা যায়, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক (সিনিয়র সহকারী সচিব) এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আর. এস. সেলিম শাহনেওয়াজ স্বাক্ষরিত ৫ ডিসেম্বর ও ২৪ ডিসেম্বর দুইটি নোটিশ প্রদান করেন লাহিনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নিকট।
    গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীণ জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের অন্তর্গত কুষ্টিয়া হাউজিং এস্টেটের ৪র্থ পর্ব প্রকল্পের অবৈধ দখলদার লাহিনী স্কুল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সেমিপাকা ভবন অপসারণ করার জন্য নোটিশ প্রদান করেছেন।
    গত ২২ ডিসেম্বর গৃহায়ন ও গনপূর্ত মন্ত্রনালয়ের আওতাধীন জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের অন্তর্গত কুষ্টিয়া হাউজিং এস্টেটের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত লাহিনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সেমি পাকা ভবন অপসারন না করে বিদ্যালয়ের নামে বরাদ্দ পাওয়ার জন্য আবেদন করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম।
    তিনি জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বরাবর এই আবেদন করেন।
    এছাড়াও জেলা প্রশাসক, কুষ্টিয়া, পুলিশ সুপার, কুষ্টিয়া, নির্বাহী প্রকৌশলী শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তর, কুষ্টিয়া, জেলা শিক্ষা অফিসার, কুষ্টিয়া, উপ. বিভাগীয় প্রকৌশলী, উপবিভাগ জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, কুষ্টিয়া ও উপজেলা মাধ্যমিক অফিসার, কুষ্টিয়াকে অবগতির জন্য অনুলিপি প্রদান করেন।
    এদিকে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী স্কুল ভবন ও স্কুলের মাঠ রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন করেন।
    লাহিনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সিনিয়র শিক্ষক আরিফুর রহমান, এলাকাবাসীর পক্ষে আজব উদ্দিন, এলসানূল করিম সবুজ, শিক্ষার্থীদের পক্ষে সাবেক ছাত্র জিহাদ উদ্দিন প্রমুখ।
    বক্তরা বলেন, লাহিনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি কুষ্টিয়া পৌরসভার ২১ নং ওয়ার্ড অন্তর্ভুক্ত। আশ পাশে কোন মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠান না থাকায় বর্তমানে লাহিনী, হরিশংকরপুর, নগর মোহাম্মদপুর, জগন্নাথপুর, গোপালপুর, পাহাড়পুর সহ বিভিন্ন গ্রাম থেকে আগত শিক্ষার্থীরা এই প্রতিষ্ঠানেই পড়াশুনা করে আসছে। শিক্ষা সম্প্রসারনের লক্ষ্যে ১৯৯৫ ইং সালে ঢাকা রোড সংলগ্ন ২১ নং কালিশংকরপুর মৌজার পতিত জলাশয় এলাকায় মাটি ভরাট করে প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু করে। এই প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ৯১৪ জন শিক্ষার্থী পড়াশুনা করছে।
    ২০২৪ ইং সালে এস.এস.সি পরীক্ষায় ১২০ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে ২৪ জন এ+ প্লাস সহ ১১০ জন পরীক্ষার্থী পাশ করে। ইতিপূর্বে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ- সম্প্রসারনের জন্য গত ৬ মার্চ ২০১৩ তিন একর জমি বরাদ্দ পাওয়ার জন্য জাতীয় গৃহায়ন ও গনপূর্ত মন্ত্রনালয়ের কাছে আবেদন করা হয়। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ জাতীয় গৃহায়ন ও গনপূর্ত মন্ত্রনালয়ের স্মারক নং জাগৃক/ভূসব্য/নোটিশটি/২০১৩/কুষ্টিয়া ৯৭১২ নং স্মারকে স্ব স্ব মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে প্রস্তাব প্রেরণসহ প্রযোজনীয় কার্যক্রম গ্রহনের পরামর্শ প্রদান করেছেন। কিন্তু গত ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ “the government and local authority land and building ordinance 1970” এর ৫ (১) উপধারা মোতাবেক প্রাতিষ্ঠানের সেমি পাকা ভবনটি ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখের মধ্যে অপসারন করতে বলা হয়েছে। অথচ বিদ্যালয়ের জায়গার বিষয়টি মেম্বার অফ ল্যান্ড এবং চিফ ইঞ্জিনিয়ার পরিমল কুরি এর উপস্থিতিতে বিদ্যালয়ের জমিটি মেপে বিদ্যালয়ের নামে বরাদ্দ দেয়। অত্র আদেশটি বাস্তবায়ন করলে প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক শ্রেণিকার্যসহ সহপাঠক্রমিক কার্যবলি পরিচালনা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। প্রতিষ্ঠানের স্বার্থের সাথে এলাকার সেন্টিমেন্টের বিষয়টি মাথায় রেখে উক্ত আদেশটি প্রত্যাহার করে বিদ্যালয়ের নামে নাম মাত্র মূল্যে বরাদ্দ দেওয়া দাবি জানানো হয়।
    বক্তরা বলেন, ৭ জনকে যে প্লট দেওয়া হয়েছে সেই প্লট বরাদ্দ বাতিল করতে হবে। না হলে আগামীতে সড়ক বন্ধ করে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
    বক্তরা আরো বলেন, এই স্কুলের আশপাশে কেউ মারা গেলে এখানে জানাজা, ঈদের নামাজ আদায় সহ শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করে। জীবন দিয়ে হলেও এই বিদ্যালয়ের জায়গা রক্ষা করা হবে।

    Spread the love