কুষ্টিয়া অফিসঃ
কুষ্টিয়া কাস্টমস এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট অফিসের ডেপুটি কমিশনার সুশান্ত পাল এর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।
জানা যায়, সুশান্ত পাল ৩০তম বিসিএস পরীক্ষায় তিনি প্রথম স্থান অর্জন করার পর কাস্টমস এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট অফিসের ডেপুটি কমিশনার হিসাবে কক্সবাজারে কর্মরত ছিলেন। সেখানে চাকুরী অবস্থায় প্রচুর পরিমানে দুর্নীতি করার পর তাকে বদলি করা হয় কুষ্টিয়াতে। এখানে বদলি হয়ে এস নতুন একটি টিম তৈরী করে রাজস্ব রেয়াতের মাধ্যমে হোটেল, রেস্তোরা, ডায়াগনষ্টিক সেন্টার সহ সকল প্রতিষ্ঠানে হানা দিয়ে অবৈধ অর্থ আদায় করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঐ সকল ব্যবসায়ীদের কাছে সুশান্ত পাল এখ মূর্তিমান আতঙ্কে পরিনত হয়েছে।
উল্লেখ্য, কক্সবাজারের কাস্টমস এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট অফিসের সাবেক ডেপুটি কমিশনার ও মোটিভেশনাল স্পিকার সুশান্ত পালের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের একজন উপ-সহকারী পরিচালককে সদস্য করে অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়। সুশান্ত পাল বর্তমানে কুষ্টিয়া কাস্টমস এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট কমিশনারেট অফিসের ডেপুটি কমিশনার হিসেবে কর্মরত। ৩০তম বিসিএস পরীক্ষায় তিনি প্রথম স্থান অর্জন করেন। ফেসবুকে তার অনুসারী প্রায় ১.৮ মিলিয়ন। চাকরি প্রত্যাশীদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় তিনি। সুশান্ত পাল ছাড়া যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে তারা হলেন- রাজস্ব কর্মকর্তা সব্যসাচী শিকদার, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন, আনিসুল করিম, সৈয়দ আবু রাসেল, মো. আলাউদ্দিন ও তৌফিক আহমেদ।
কক্সবাজারে কলাতলী বিচের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সুশান্ত পাল ও তার ছয় সহযোগী পর্যটন কেন্দ্রটির নামিদামি হোটেল-রেস্টুরেন্টের রাজস্ব রেয়াতের মাধ্যমে শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। একই সঙ্গে সরকারকে বছরে কয়েকশ কোটি টাকা রাজস্ব বঞ্চিত করেছেন। এসব বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ২০২০ সালে একটি অভিযান পরিচালনা করে দুদক। ওই অভিযানে হোটেল মালিকদের রাজস্ব ফাঁকির প্রমাণ পায় সংস্থাটি। এসব বিষয় আমলে নিয়ে দুদকের গোয়েন্দা বিভাগ অভিযোগ অনুসন্ধানে নামে। কক্সবাজারের ব্যবসায়ীরা এক প্রতিবেদনে দুদককে জানান, কক্সবাজারে চার শতাধিক হোটেল-রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এসবের অন্তত ৩০টি হোটেল-রেস্টুরেন্ট ও জাহাজের রাজস্ব ফাঁকির আলামত খুঁজে পেয়েছে দুদক। পরে এ বিষয়ে কমিশন থেকে একটি অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়।
দুদকের তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, ৩১ জানুয়ারি সুশান্ত পালকে তলব করে দুদক। ১৮ ফেব্রুয়ারি সুশান্ত পালকে অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে সংস্থাটি। প্রায় পৌনে এক ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদে দুদক কর্মকর্তাদের অনেক প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। অভিযোগ ও জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গে মুখ খুলেননি সুশান্ত পাল।
কুষ্টিয়াতে যোগদানের পর থেকেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে রাজস্ব রেয়াতের মাধ্যমে অর্থ আদায় করে চলেছে। ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ার এক ডায়গনষ্টিক সেন্টার তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলাও করেছে, অন্য আরেকটি ক্লিনিকের কাছ থেকে বৃহত পরিমান অর্থ আদায় করেছে যা দৃশ্যমান। কুষ্টিয়ার সকল ব্যবসায়ীরা দুদকের দৃষ্টি আকর্শন করে বলেন, কক্সবাজারে দুর্নীতি করে আসার পর এখানে রাজস্ব রেয়াতের মাধ্যমে অর্থ আদায় করে যাচ্ছে আমার তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি। এ বিষয়ে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।