Pathikrit Most Popular Online NewsPaper

    কুষ্টিয়া অফিসঃ

    সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আসামি পক্ষের ৮ থেকে ১০টি ঘরবাড়িতে ভাঙচুর করা হয়েছে। চারটি পরিবারের ঘরবাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আসামিপক্ষের পরিবারগুলো পুরুষ শূন্য।  নিহতের পক্ষের লোকজন যেকোনো সময় আবারও হামলা করতে পারে এমন আশঙ্কায় বাড়িতে অবস্থানকারী নারী ও শিশুরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। ওই এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

    ময়নাতদন্তের শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে নিহতের বাড়িতে মরদেহ পৌঁছালে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের লোকজন ও স্বজনরা। শেষবারের মতো মরদেহ দেখতে ভিড় করেন স্থানীয়রা ও স্বজনরা। তারা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর হামলা, ঘরবাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন আসামিপক্ষের লোকজন। 

    মানিক নামে একজন বলেন, আমাদের পক্ষের পুরুষ মানুষ সবাই পলাতক। হত্যাকাণ্ডের পর বুধবার রাতে ১০টি বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে নিহত পক্ষের লোকজন। ১০ থেকে ১২টি গরু, ধানসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে গেছে। এছাড়াও  আকাল, মশান, আশান ও সোহানের বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। গরু ছাগল ও জিনিসপত্র নিয়ে গেছে। রাজ্জাক শেখ, হেলাল, মান্নানসহ অনেকের বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। আজ রাতে কী হবে তা নিয়ে আমরা ভয়ে আছি। অনেকে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আমাদের নিরাপত্তা চাই। হত্যা ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িত দুই পক্ষের দোষীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। 

    তবে নিহতের পক্ষের আলিমুন হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নান্নুকে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে। ঘরবাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট কারা করছে তা আমরা জানি না। এলাকায় বিভিন্ন স্থানে পুলিশ প্রশাসন দায়িত্ব পালন করছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

    নিহতের স্বজনরা বলেন, নান্নু বুধবার ইফতার শেষ করে বাড়ি থেকে কেশবপুরে তার ইজারা নেওয়া দিঘিতে যাচ্ছিলেন। পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন পথিমধ্যে তার গতিরোধ করে জোরপূর্বক পাশের একটি ভুট্টা খেতে নিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। আমরা হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। 

    কুমারখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম বলেন, আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। নতুন করে সংঘর্ষ এড়াতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অপরাধীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। বিষয়টি তদন্ত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অপ্রীতিকর যে কোনো ঘটনা প্রতিরোধে পুলিশ কাজ করছে। 

    উল্লেখ্য, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আমিরুল হোসেন নান্নু (৪৫) নামে এক ব্যবসায়ীকে পায়ের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাথাড়ি কুপিয়ে ও মারপিট করে খুন করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। বুধবার (১৩ মার্চ) রাত ৮টার দিকে উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর চাঁদপুর গ্রামের ডাকুয়া নদীর পাড়ে এ ঘটনা ঘটে।

    নিহত আমিরুল কুমারখালী উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের উত্তর চাঁদপুর গ্রামের মৃত আবদুল জলিলের ছেলে। তিনি গ্রামের বাজারে মাছের আড়তদারি করতেন। মাছের ঘেরও আছে তার। এছাড়া তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাংশের কর্মী ছিলেন। তিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি তহিদ মাস্টারের পক্ষের কর্মী বলে জানা গেছে। 

    Spread the love