কুষ্টিয়া অফিসঃ
কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের হেল্প ডেস্ক ঘিরে দালাল ও প্রতারক চক্র রমরমা ব্যবসা চালাচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হেল্প ডেস্কে এখন পর্যন্ত কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। সেই সুযোগে চক্রটি হেল্প ডেস্ক দখলে নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে রোগী ভাঙিয়ে বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকে নিয়ে গিয়ে অহেতুক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে সর্বশান্ত করে ফেলছে অসহায় রোগীদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দালাল ও প্রতারক চক্র হেল্প ডেস্কে দাঁড়িয়ে থাকে। নিপা, শিউলি, অবনী সহ প্রায় ডজনখানেক রয়েছে এসব চক্রের অন্যতম সক্রিয় সদস্য। হেল্প ডেস্কের পাশ দিয়ে রোগী বা তাঁর অভিভাবক গেলেই তাঁদের কি সমস্যা, কোথায় যাবে, কোন ডাক্তার দেখাবে ইত্যাদি তথ্য জিজ্ঞেস করে। কৌশলে তাঁদের ভুলিয়ে ভালিয়ে নিয়ে যায় বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। সেখানে বসে থাকা ডাক্তার নামধারী টেস্ট ব্যবসায়ীদের পরিচয় দেওয়া হয় সদর হাসপাতালের জরুরি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসাবে। এসব কথিত চিকিৎসকরা ইচ্ছে মতো বিভিন্ন অহেতুক পরীক্ষা-নিরীক্ষা লিখে দেয়। এরপর ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো সেই টেস্ট করাতে দালালের চাহিদা অনুযায়ী মোটা অংকের টাকা লুফে নেয়। এতে ভুলভাল চিকিৎসা নিয়ে সর্বশান্ত হয়ে ঘরে ফিরছে হাসপাতালে চিকিৎসা প্রত্যাশী সাধারণ রোগীরা।
সদর হাসপাতালে চিকিৎসা প্রত্যাশী শহিদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি জানান, তিনি নাকের চিকিৎসা নিতে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে এসেছেন। নিয়ম অনুযায়ী বহিঃবিভাগের টিকিট কাটার পর তাঁকে ৩ নম্বর বহিঃবিভাগে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি ৩ নম্বর বহিঃবিভাগের কক্ষ চিনতে না পারায় হেল্প ডেস্কে জিজ্ঞেস করেন। এরপর এক নারী দালাল ৩ নম্বর বহিঃবিভাগের জরুরি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কথা বলে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে গিয়ে দেড় হাজার টাকার টেস্ট বানিজ্য করেছেন। শহিদুলের মতো প্রতারিত হওয়া আরও বেশ কয়েকজন একইভাবে প্রতারিত হওয়ার কথা জানিয়েছেন।
এবিষয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, হেল্প ডেস্কে একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। জনবল সংকটের কারণে তাকে অন্য জায়গায় দেওয়া হয়েছে। তবে দালাল চক্রের বিষয়ে জানা নেই। কিভাবে দালাল নিধন করা যায় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নিচ্ছি।