Pathikrit Most Popular Online NewsPaper

    ডাঃ কাশমিম সুজনের ফাইল ছবি

    শৈলকুপা প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহের শৈলকুপায় সরকারি আদেশ অমান্য করে বীরদর্পে বিভিন্ন জটিল অপারেশন করছেন ডাঃ কাশমিম সুজন। 

    ডাঃ কাশমিম সুজনের ভুল অপারেশনে ফাতেমা খাতুন নামের এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

    প্রসূতির মৃত্যুর পরেও তিনি ‘বেঁচে আছে’ বলে স্বজনদের জানিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে গোপনে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে নিলে চিকিৎসকরা প্রসূতির মৃত্যুর বিষয়টি জানান।

    রবিবার (২ জুন) দুপুরে শৈলকুপার কবিরপুর খন্দকার প্রাইভেট হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এই ঘটনা ঘটে।

    বিষয়টি জানাজানি হলে সন্ধ্যায় প্রাইভেট হাসাপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালায়। এ সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উপস্থিত ছিলেন। অভিযানে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বনি আমিন অবৈধ প্রাইভেট হাসপাতাল বন্ধ ঘোষনা করেন। একই সঙ্গে অভিযুক্ত চিকিৎসক ও ক্লিনিকের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দেন।

    এর আগেও অভিযুক্ত চিকিৎসকের হাতে সিজারের সময় নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তাকে গত ১৩ মার্চ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ মোছাঃ মাহফুজা খাতুন চিঠি দিয়ে জানান যে, আপনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না হওয়ায় সকল ধরনের অপারেশন থেকে বিরত থাকতে। যার স্মারক নং- উপঃ পঃ কমঃ/শৈল/ঝি/২৪/২৯৩।

    নিহত প্রসূতি ফাতেমা বেগমের স্বজন ও স্থানীয়রা জানায়, রবিবার সকালে শৈলকুপার মালিথিয়া গ্রামের কৃষক জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা খাতুনের প্রসব বেদনা উঠলে তাকে শহরের কবিরপুরে খন্দকার প্রাইভেট হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সিজারের জন্য ভর্তি করা হয়। দুপুরে সেখানে সিজার করেন ডাঃ কাশমিম সুজন, এনেসথেসিয়া দেন আরেক চিকিৎসক ডাঃ মুনতাসির। সিজারের পরপরই মারা যান ফাতেমা খাতুন। তিনি একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন, নবজাতক সুস্থ রয়েছে।

    প্রসূতির মৃত্যুর পরেও স্বজনদের ভুল বুঝিয়ে রোগী বেঁচে আছেন জানিয়ে দ্রুত একটি অ্যাম্বুলেন্সে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকে জানানো হয়-আগেই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে স্বজন ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

    মৃত প্রসূতির স্বামী জাহিদুল ইসলাম বলেন, তার স্ত্রী ফাতেমা খাতুনকে সিজারের নামে হত্যা করা হয়েছে। সিজারের আগে তিনি সুস্থ্য ছিলেন। মৃত্যুর পরেও কেন কুষ্টিয়া পাঠানো হলো। 

    অভিযুক্ত কবিরপুর প্রাইভেট হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার রেজা বলেন, ‘আমরা রোগীর স্বজনদের সঙ্গে মীমাংসা করে ফেলেছি’।

    হাসপাতালটির মালিক ফজলুর রহমান বলেন, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। 

    প্রসূতির মৃত্যুর বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ডাঃ কাশমিম সুজন বলেন, আমি তো আপনাদের ভাই, নিউজ করার দরকার নেই, আপনারা ব্যাপারটা একটু দেখবেন।

    উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আহসানুল মিজান রুমি জানান, ওই ক্লিনিকের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে এরই মধ্যে সিভিল সার্জন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে আলাপ করেছেন তিনি। এ ছাড়া যিনি অপারেশন করেছেন, সেই কাশমিম সুজনকে গত মার্চ মাসে চিঠি দিয়ে কোনো ধরনের অপারেশন না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না হয়েও বিভিন্ন ক্লিনিকে অপারেশন করছেন, যা সরকারি আদেশের পরিপন্থি। তাই তাকে সকল প্রকার অপারেশন করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। 

    তিনি আরো বলেন, অপ চিকিৎসায় প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

    ডাঃ কাশমিম সুজন সম্পর্কে আরো জানতে চোখ রাখুন দ্বিতীয় পর্বে

    Spread the love