কুষ্টিয়া অফিস:
কুষ্টিয়া সহ বাংলাদেশের প্রায় সকল খাদ্য গুদামে শ্রমিক সরবরাহের জন্য দীর্ঘ ২ বছর ধরে কোন ঠিকাদার নেই। আইনি জটিলতার কারনে সরকার কোন ঠিকাদার নিয়োগ করতে পারেনি। আর এই সুযোগে খাদ্য বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা প্রতিমাসে হাতিয়ে নিচ্ছে শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দকৃত টাকার সিংহ ভাগ। এর জন্য দানা বাঁধছে শ্রমিক অসন্তোষ। তাই চলতি মৌসুমে ধানচাল, গম সংগ্রহ বাধাগ্রস্থ হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, কুষ্টিয়া সহ বাংলাদেশের প্রায় সকল খাদ্য গুদামে শ্রমিক সরবরাহের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে কোন ঠিকাদার নেই। এরই সুযোগে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শ্রমিকদের মজুরির টাকা নয়-ছয় করে চলেছেন। শ্রমিকদের অভিযোগ, মিলারদের গাড়ী থেকে গুদামে চাল নামানোর জন্য সরকার নির্ধারিত চাল লোডিং বিল প্রতি টন ৭২.৩৭ টাকার বিপরিতে প্রদান করা ৩৫ টাকা। অন্যদিকে আনলোডিং এর বিল টন প্রতি ৭০.৪২ টাকা এবং চালের বস্তায় সিল মারা বাবদ টন প্রতি সরকারী বরাদ্দ ৩০ টাকা হলেও এই দুইটির কোনটিই কখনই পায়না শ্রমিকরা। এর প্রতিবাদ করতে গেলে ২৫ মে শ্রমিকদেরকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকে বের করে দেন সদর উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি এলএসডি) ইসমাইল আদম। এতে শ্রমিকদের মধ্যে অসস্তোষ দেখা দিয়েছে। ন্যায্য মজুরি চাওয়ায় দারোয়ানকে দিয়ে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয় শ্রমিকদের। মিল মালিকদের গুদামে সরবরাহ করা চাল নামানো এবং ওঠানোর জন্য যে পরিমাণ টাকা সরকারী ভাবে বরাদ্দ রয়েছে তা না দিয়ে গুদামের কর্মকর্তা ৮১ শতাংশ টাকা ঢোকাচ্ছেন নিজের পকেটে।
ভুক্তভোগী শ্রমিকরা আরো জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সমগ্র বাংলাদেশের প্রায় সকল খাদ্য গুদামের চিত্র একই। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান না হলে কুষ্টিয়া খাদ্য গুদামের মতন সমগ্র বাংলাদেশের এই খাতের শ্রমিকরা বঞ্চিত হবে দিনের পর দিন এবং দেখা দিতে পারে শ্রমিক অসন্তোষ। এতে করে চলতি মওসুমে সরকারের ধানচাল,গম সংগ্রহ পড়বে হুমকির মুখে।
সংশ্লিষ্ট প্রসঙ্গে অভিযুক্ত গুদাম কর্মকর্তা ইসমাইল আদম তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, ঠিকাদারের মাধ্যমেই শ্রমিকরা সরকার নির্ধারিত টাকা পায়।
ঠিকাদার না থাকার বিষয়টি স্বীকার করে জেলা খাদ্য কর্মকর্তা ওয়াজিউর রহমান বলেন, কুষ্টিয়া সহ বাংলাদেশের বেশিরভাগ জেলার খাদ্য গুদামে কোন ঠিকাদার নেই। আর এরই সুযোগে কিছু অসাধু কর্মকর্তা সরকারি অর্থ লোপাট করছে।