Pathikrit Most Popular Online NewsPaper

    সাইদুল করিম মিন্টুর ফাইল ছবি

    ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ

    ঝিনাইদহের রাজনীতিতে এক আলোচিত নাম সাইদুল করিম মিন্টু। দেড় দশক ধরে দেশের অন্যতম অপরাধপ্রবণ জেলা ঝিনাইদহকে এক হাতে নিয়ন্ত্রণ করছেন তিনি। সম্প্রতি সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে গত মঙ্গলবার (১১ জুন) বিকেলে সাইদুল করিম মিন্টুকে আটক করেছে পুলিশ। তার পর থেকে সারা দেশে মিন্টুকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছিলো আর তার ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়।
     
    জোরপূর্বক জমি দখল, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ নানা অনিয়ম করে শত শত কোটি টাকা কামিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে মিন্টুর বিরুদ্ধে। কেউ তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই তাকে ভয়াবহ পরিণতির শিকার হতে হয়। অথচ একসময় পিতার মৃত্যুর পর অর্থাভাবে মামাবাড়িতে থেকে লেখাপড়া করতে হয়েছিল তাকে। 

    খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হরিণাকুণ্ডু উপজেলার নিভৃত পল্লী ভায়না গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সাইদুল করিম মিন্টু।

    পিতা রুহুল কুদ্দুসকে গুলি করে হত্যা করে চরমপন্থীরা। অর্থাভাবে পাশের চরপাড়া এলাকায় মামাবাড়ি চলে যান মিন্টু। কয়েক বছর পর সদ্যঃপ্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা তৈয়ব আলী জোয়াদ্দারের হাত ধরে ঝিনাইদহ শহরে চলে আসেন মিন্টু। তার সহযোগিতায় কোনোরকমে দিন পার করত মিন্টু। তখন একটি স্কুলে মিন্টুকে ভর্তি করে দেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা। পরে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন মিন্টু। 

    সেখান থেকে সখ্য গড়ে তোলেন জাসদ নেতা ও ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মশার সঙ্গে। সেই থেকে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। এরপর ১৯৮৩ সালে জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

    ১৯৮৯ সালে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন তিনি। 

    ঝিনাইদহে নিজের সাম্রাজ্য গড়ে তুলতে মরিয়া হয়ে ওঠে মিন্টু। সাবেক এক সংসদ সদস্যের মাধ্যমে বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদ বাগিয়ে নেয়। ২০১১ সালের ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন মিন্টু। দোকান মালিক সমিতি, ডায়াবেটিকস সমিতি, ইটভাটা মালিক সমিতিসহ বেশ কিছু সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ২০১৫ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন মিন্টু।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা আওয়ামী লীগের এক প্রবীণ নেতা জানান, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে মিন্টু সন্ত্রাসীদের লালন-পালন করে আসছে। তাদের মাধ্যমে সালিসি বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য, জোরপূর্বক জমি দখল, টেন্ডারবাজিসহ অবৈধ পন্থায় শতকোটি টাকার মালিক বনে গেছেন তিনি। আমেরিকা, মালয়েশিয়া ও ভারতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বসবাসের জন্য বহুতল ভবন রয়েছে তাঁর। 

    জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে দুদক সাইদুল করিম মিন্টুর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করে। নিজের ক্ষমতাবলে মিথ্যা মামলা করে পৌরসভা নির্বাচন আটকে রাখেন তিনি। ফলে একটানা ১১ বছর ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন মিন্টু। 

    Spread the love