আশরাফুল আলমঃ
ঝিনাইদহের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল এর সদস্যরা ঝিনাইদহ সদর থানাধীন বাসটার্মিনাল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কথিত মূর্তি লেনদেনের সময় প্রতারক কথিত জ্বীনের বাদশার ০৩ (তিন) সদস্যকে গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন, নূর আলম (২৩), পিতা- আজিজর রহমান, মোঃ মামুন হোসেন (৩৪), পিতা-আবু বকর সিদ্দিক, সাইফুল (৩৫), পিতা-দুলা বা দুলু, সর্ব সাং-সমসপাড়া, থানা-গোবিন্দগঞ্জ, জেলা-গাইবান্ধা।
জানা যায়, গত ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিঃ মোছাঃ বিথি (২৮) নামের একজন ভুক্তভোগীকে মোবাইল ফোনে
অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি গভীর রাতে কল করে। অভিযোগকারী ফোন রিসিভ করলে ভৌতিক শব্দ শুনতে পায় এবং অপরপ্রান্ত থেকে বলে “আমি মানুষ না, আমি জ্বীন, তুই জ্বীনের সাথে কথা বলছিস মা।” তখন রাত গভীর হওয়ায় এবং ভৌতিক শব্দ শুনে ভুক্তভোগী ভয় পায়। তখন পরিচয় দেয় “আমি জ্বীনের বাদশা কহিকাপ নগরীর ভাসমান মসজিদ থেকে বলছি। তুই তোর পরিচয় দে মা, তোর মঙ্গল হবে অথবা তুই তোর পরিবারসহ এখনি ধ্বংস হয়ে যাবি।” ভুক্তভোগীর স্বামী বিদেশ থাকায় এবং একটি মাত্র কন্যা সন্তান হওয়ায় ভুক্তভোগী ভয় পেয়ে তার পরিবারে সকল তথ্য দিয়ে দেয়।
তখন জ্বীনের বাদশা পরিচয়দানকারী বলে তুই জায়নামাজ, কোরআন ও অন্যান্য সামগ্রী কেনার জন্য আগামীকাল সকালে নগদের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা না দিলে পরিবারসহ ধ্বংস হয়ে যাবে। স্বামী-সন্তানের ক্ষতির ভয়ে বাদী জ্বীনের বাদশার কথা মত ২০ হাজার টাকা জ্বীনের বাদশার নগদ নম্বরে প্রেরণ করে। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী উক্ত বিষয় সংক্রান্তে পুলিশ সুপার, ঝিনাইদহের নিকট অভিযোগ করলে পুলিশ সুপার, ঝিনাইদহ সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল’কে উক্ত অভিযোগটি তদন্তের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।
সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল এর একটি চৌকস টীম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, জ্বীনের বাদশা পরিচয়দানকারী আন্তঃ জেলা প্রতারক চক্রের সদস্য, তারা উক্ত চক্রটিকে গ্রেফতার করার জন্য তৎপর হয়। অভিযোগকারীকে দিয়ে তারা চক্রটিকে গ্রেফতারের জন্য ফাঁদ পাতে। এক পর্যায়ে অদ্য বুধবার ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিঃ তারিখে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল এর সদস্যরা ঝিনাইদহ সদর থানাধীন বাসটার্মিনাল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে বাদীর কাছে কথিত মূর্তি লেনদেনের সময় তাদেরকে হাতে নাতে গ্রেফতার করে।
পরবর্তীতে রেকর্ড পত্র পর্যালোচনায় দেখা যায় প্রতারক চক্রদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। প্রতারকদের বিরুদ্ধে আইনগত কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে।