কুষ্টিয়া অফিসঃ
তৃণমূলের ত্যাগী, যোগ্য, নির্যাতিত ও পরিক্ষিত নেতাদের বাদ দিয়ে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার অভিযোগে তুলেছেন পদবঞ্চিতরা। নবগঠিত কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন পদবঞ্চিত হাজারো নেতাকর্মীরা। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নবগঠিত কমিটির নেতারা।
বুধবার (৬ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। সেখানে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত হন।
পরে পাবলিক লাইব্রেরি মাঠ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মজমপুরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রতিবাদ করেন তারা। এসময় বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল, মহিলা দল সহ বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মীরা উপস্তিত ছিলেন। কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির পদবঞ্চিত ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের আয়োজনে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদ্য সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. শামিম উল হাসান অপুর সভাপতিত্বে এবং জেলা বিএনপির সাবেক যুব বিষয়ক সম্পাদক মেজবাউর রহমান পিন্টুর পরিচালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- জেলা বিএনপির সদ্য সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মিরাজুল ইসলাম রিন্টু, কাজল মাজমাদার, হাবলু মোল্লা, আব্দুর রাজ্জাক, খোকসা থানা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ আমজাদ আলী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আনিসুজ্জামান স্বপন, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মোখলেছুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক রঞ্জু আহমেদ, জেলা জাসাসের সভাপতি এম রানা আহম্মেদ সঞ্জু।
এসময় পদবঞ্চিত বিএনপির নেতারা বলেন, কুষ্টিয়া জেলার তৃণমূলের ত্যাগী, নির্যাতিত, পরীক্ষিত ও যোগ্য নেতাদের বাদ দিয়ে অর্থের বিনিময়ে জেলা বিএনপি মনগড়া পকেট কমিটি গঠন করা হয়েছে। নব গঠিত এই পকেট কমিটি বিএনপি ত্যাগী নেতারা প্রত্যাখ্যান করেছে। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বিতর্কিত একতরফা আহ্বায়ক কমিটি বাতিল করা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা দেয়া হবে।
তারা আরও বলেন, জেলার ত্যাগী, নির্যাতিত, পরিক্ষিত ও যোগ্য নেতাদের বাদ দিয়ে পকেট কমিটি গঠন করা হয়েছে। অবিলম্বে পকেট কমিটি বাতিল করে যোগ্যদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হোক। তা-না হলে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে। এসময় আরো উপস্থিতি ছিলেন, বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল সহ বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মীরা।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে নব গঠিত জেলা বিএনপির নেতারা বলেন, জেলা বিএনপির কমিটি গঠনের বিষয়টি কেন্দ্রের। কেন্দ্র থেকে কমিটি গঠন করা হয়েছে। ত্যাগীদের মূল্যায়ন করার ফলে পুরনোরা বাদ পড়েছেন। তবে আমরা সবাই মিলে একসাথে দলের জন্য কাজ করতে চাই। আমরা গ্রুপিংয়ের রাজনীতি চাই না। আমরা সবাইকে সাথে নিয়ে দলকে আরও সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে চাই।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার (৪ নভেম্বর) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি কুতুব উদ্দিন আহমেদকে আহ্বায়ক ও কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সরকারকে সদস্য সচিব করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর জেলা বিএনপির কমিটি বাতিল করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। তার আগে ২০১৯ সালের ৮মে সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমিকে সভাপতি ও অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট জেলা বিএনপি’র সবশেষ কমিটি ঘোষণা করা হয়।