Pathikrit Most Popular Online NewsPaper

    নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

    কুষ্টিয়া সদর উপজেলার উজানগ্রাম ইউনিয়নের মহিষাডাঙ্গা গ্রামে ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

    রবিবার দিবাগত রাতে মুঠোফোনে কল দেওয়ার পর “খেলা করতে হলে জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে করতে হবে” বলে জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার পার্থ প্রতিম শীল।

    আয়োজক জাহিদ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা লন্ডন প্রবাসী জাহিদুল ইসলাম জেলা প্রশাসকের বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেও অনুমতি পায়নি বলে জানা গেছে। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা বন্ধ করে দেওয়ায় এলাকায় চলছে নানা গুঞ্জন।

    সোমবার দুপুরে লাঠিখেলার সময় পুলিশ গিয়ে খেলা বন্ধ করে দেয়।

    এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, যুগযুগ ধরে চলে আসা এই খেলা করতে কখনো প্রশাসনের অনুমতি লাগেনি। কৃষকের ধান কাটার পর এলাকার মানুষকে বিনোদন দিতে এই লাঠিখেলার আয়োজন করা হতো। এখন যদি এই খেলা বন্ধ করে দেওয়া হয় তবে এটা খুবই দুঃখজনক। একটি সূত্র জানায়, উজানগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা আক্কাস আলী মন্ডল খেলাটা বন্ধ করতে নানা ভাবে ষড়যন্ত্র করেছে। তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দিয়ে এই খেলা বন্ধ করিয়েছেন। কেউ কেউ বলছেন, এই ইউএনও আওয়ামীলীগের দোসরদের সময় কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় আসেন। তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফ এমপির চাচাতো ভাই ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতার আশির্বাদপুষ্ট।

    গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা সরকারের থাকাকালীন সময়ে যেকোনো খেলাধুলা, ওয়াজ মাহফিল করতে প্রশাসনের অনুমতি নেওয়া লাগতো। এর আগে এমন অনুমতি নেওয়া লাগেনি। এই স্বৈরাচারী, গণহত্যাকারী ও লুটেরা সরকার ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পালিয়ে যায়। তবে তাদের দোসররা বিভিন্ন অফিস আদালতে এখন বিরাজমান। দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে চালাচ্ছেন নানা ষড়যন্ত্র। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলার ওপরেও আঘাত হানা হচ্ছে। এতে মাদক ও মোবাইলে আসক্ত হচ্ছে যুব সমাজ। আঞ্চলিক লাঠিয়াল বাহিনীর সর্দার উজানগ্রাম ইউনিয়নের মহিষাডাঙ্গা গ্রামের সেলিম উদ্দিন বলেন, আমার বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে আমি লাঠিখেলা করে আসছি। কখনো প্রশাসনের অনুমতি নেওয়া লাগেনি। আমার বাপ-দাদারাও এই খেলা করতেন।

    গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলার উদ্যোক্তা জাহিদ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা লন্ডন প্রবাসী জাহিদুল ইসলাম জাহিদ জানিয়েছেন, আমি গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে এই খেলার আয়োজন করেছিলাম। এই খেলা করতে প্রশাসনের অনুমতি নিতে হয় জানা ছিল না। ইতিপূর্বে ইবি থানা পুলিশ এসে খেলাটি বন্ধ করে দেয়। তাঁরা জানান ইউএনও খেলা করতে নিষেধ করেছেন।

    এবিষয়ে ইউএনও’র সাথে কথা বললে তিনি জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে খেলা করতে বলেন। আমি জেলা প্রশাসকের বরাবর একটি লিখিত আবেদন দিয়ে আসি। এরপর গতকাল (রবিবার) রাতে ইউএনও মুঠোফোনে কল দিয়ে জেলা প্রশাসকের অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত খেলা না করার জন্য নির্দেশ দেন।

    এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পার্থ প্রতিম শীল এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি খেলা বন্ধ করিনি। আমি বলেছি জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে খেলা করতে।

    Spread the love