শৈলকূপা উপজেলা প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার সনিয়া আক্তার মুক্তা। অফিস চলাকালীন সময়েই নির্ধারিত ফি নিয়ে গোপনে রোগী দেখেন ও আল্ট্রা-সনো করেন উপজেলার সাহিদা প্রাইভেট হাসপাতালে।
মঙ্গলবার (০৪ জুন) বেলা সাড়ে ১২ ঘটিকায় দিকে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে দায়িত্বরত থাকা সময়ে প্রাইভেট হাসপাতালে রোগী দেখছিলেন ওই ডাক্তার। এমন তথ্যে সংবাদ সংগ্রহে যান দৈনিক একুশের বাণী পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি আব্দুস সালাম।
সরজমিনে গিয়ে এ ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। তথ্য-উপাত্ত নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ ও অভিযুক্ত ডাক্তারের সাক্ষাৎকার নেন সাংবাদিক আব্দুস সালাম। সংবাদ সংগ্রহের বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজরে গেলে ওই সাংবাদিককে হেনস্তা ও মারধর করে তার মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে তথ্য-উপাত্ত নষ্ট করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে ভুক্তভোগী সাংবাদিককে হাসপাতালে বন্দী করে রাখা হয়। প্রাইভেট হাসপাতালটির মালিক মিলন, কাজল ও ম্যানেজার হামিদের নেতৃত্ব এ ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে উপজেলায় কয়েকজন সংবাদকর্মী ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিককে উদ্ধার করেন।
এ ঘটনার পর ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিককে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। উক্ত ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করলে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পঃপঃ কর্মকতা ডাঃ মোঃ আহসান মিজান রুমি হোসেনকে জানালে তিনি স্টেশনে না থাকায় প্রতিনিধি হিসেবে ডাঃ আরিফ হোসেনকে পাঠিয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক আব্দুস সালাম বলেন, আমি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি অফিস চলাকালীন সময়ে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ সোনিয়া আক্তার মুক্তা আল্ট্রা-সনো করেন উপজেলার সাহিদা (প্রাঃ) হাসপাতালে এন্ড ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার। ডাঃ মুক্তার অনুমতি নিয়ে তাঁর সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি অনুমতি প্রদান করে বলেন, ভাই আমার আত্মীয় অসুস্থ থাকায় আমি অফিস টাইমে আল্ট্রা-সনো করতে আসি মানবিক দিক থেকে। পরবর্তীতে কোন কিছু জিজ্ঞেস না করে হাসপাতালের মালিক মিলন এর নেতৃত্বে হামিদ ও কাজল আমার ফোন কেড়ে নিয়ে আমাকে মারধর করে আটকিয়ে রাখে।
অভিযুক্ত ডাক্তার সনিয়া আক্তার মুক্তা বলেন, সাংবাদিক আঃ সালাম অনুমতি নিয়ে আমার চেম্বারে প্রবেশ করে কথা শেষ করে বের হবার সময় তাঁর ফোন কেড়ে নিয়ে লাঞ্ছিত করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এবিষয়ে আমি আন্তরিক ভাবে লজ্জিত।
সাহিদা (প্রাঃ) হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনোষ্টিক সেন্টারের মালিক মিলনের কাছে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পঃপঃ কর্মকতা ডাঃ মোঃ আহসান মিজান রুমি বলেন, আমি ঢাকায় আছি কাল এসে বিষয়টি দেখব।
জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ শুভ্রা রাণী বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে শৈলকূপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম চৌধুরী জানান, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। এবিষয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।