অনলাইন ডেস্ক:
দেশে চলমান গ্যাস সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেছেন, বেশ কয়েক মাস ধরেই শিল্পকারখানায় গ্যাস সংকট চলছে। সরবরাহ না থাকায় দিনের পর দিন বিভিন্ন কারখানা বন্ধ থাকছে। এতে উৎপাদনে ধস নেমেছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে শিল্পোৎপাদন গভীর সংকটে পড়বে। ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। শিল্পকারখানা বন্ধ হলে কিংবা বেতন দিতে না পারলে লাখ লাখ শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে। দেশের অর্থনীতিতেই পড়বে চাপ। তাই গ্যাস সংকট নিরসনে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
এফবিসিসিআই সভাপতি গণমাধ্যমকে আরও বলেন, গ্যাস আমদানিনির্ভর একটি জ্বালানি। বর্তমানে বৈশ্বিক পরিস্থিতিও ভালো নয়।
ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহিদের নিয়ন্ত্রণ ও হামলার কারণে লোহিত সাগর দিয়ে জাহাজ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বিকল্প পথে জাহাজ চলাচলের কারণে দূরত্ব বেড়ে যাওয়ায় জ্বালানি খরচ, জাহাজ ভাড়া তথা আমদানি খরচ বেড়ে যাচ্ছে। তার ওপর আছে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি। শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতেও ব্যয় বাড়ছে। চলমান গ্যাস সংকট মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসাবে দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা চোখেমুখে অন্ধকার দেখছেন।
এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। পাকিস্তান ও ইরানের পালটাপালটি হামলা এ অঞ্চলে অশান্তি তৈরি করছে। তাই সরকারকে সাবধানে পা ফেলতে হবে। শিল্প-কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ দিয়ে উৎপাদন অব্যাহত রাখতে জ্বালানি মন্ত্রণালয়েকে দ্রুত সঠিক পদক্ষেপ নেয়ার কথাও বলেন তিনি।
তিনি বলেন, জ্বালানি মন্ত্রণালয় ২০২৬ সালে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের কথা বলছে। মাত্র ‘২৪ সাল শুরু হয়েছে। নিরবচ্ছিন্ন গ্যাসের জন্য যদি দুই বছর অপেক্ষা করতে হয় সেই সময়টা অনেক বেশি। এফএসআরইউ বা রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট সংস্কারজনিত কারণে গ্যাস সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং এই সমস্যা সাময়িক বলে দাবি করছে জ্বালানি মন্ত্রণালয়। এফবিসিসিআই চায় ইউনিট সংস্কার করে শিল্প কারখানায় দ্রুত গ্যাস সরবরাহ দেয়া হোক।
‘সাময়িক’ সংকট নিরসন করে শিল্পের চাকা সচল রাখবে। একইসঙ্গে গ্যাসের পর্যাপ্ত আমদানি এবং নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহে সরকার দ্রুত ও যথাযথ পদক্ষেপ নেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।