
কুষ্টিয়ার ৪টি আসনের তিনটি আসনে নৌকা পরাজিত হয়েছে। শুধুমাত্র সদর আসনে নৌকা জয়ী হয়েছে। যদিও নির্বাচন শুরুর কয়েক ঘণ্টা পর সদর আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী পারভেজ আনোয়ার তনু বিভিন্ন অভিযোগ এনে নির্বাচন স্থগিতের দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করে।
কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য আকম সারওয়ার জাহান বাদশা নৌকা প্রতীকে ৪৭ হাজার ৫৬৭ ভোট পেয়েছেন। এ আসনে ট্রাক প্রতীকে ৮৬ হাজার ৫০ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন সাবেক এমপি আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ রেজাউল হক। বাদশা ৩৮ হাজার ৯৭২ ভোটের ব্যবধানে হেরে তৃতীয় হয়েছেন।
কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামারুল আরেফিন ট্রাক প্রতীকে জয়ী হয়েছেন। তিনি ১ লাখ ১৫ হাজার ৭ শ’ ৯৯ ভোট পেয়েছেন, পরাজিত বর্তমান এমপি জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু পেয়েছেন ৯২ হাজার ৪ শ’ ৪৫ ভোট। কামারুল ২৩, ৩৫৪ ভোটে বিজয়ী হয়েছেন।
কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে নৌকা প্রতীকে মাহবুব উল আলম হানিফ ১ লাখ ২৮ হাজার ৫৩৩ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকে পারভেজ আনোয়ার তনু ৪৩ হাজার ৬২৬ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন।
কুষ্টিয়া-০৪ (খোকসা-কুমারখালী) সাবেক এমপি আওয়ামী লীগ নেতা ট্রাক প্রতীকে আব্দুর রউফ ৯৮ হাজার ৪২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন, তার নিকটতম প্রার্থী বর্তমান এমপি ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জজ পেয়েছেন ৮০ হাজার ১১১ ভোট।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন:

কুষ্টিয়া–৩ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহবুব উল আলম হানিফের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী পারভেজ আনোয়ারের পোলিং এজেন্ট ও কর্মীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে, মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমন পরিস্থিতিতে ভোট গ্রহণ স্থগিত করে পুনরায় নির্বাচন করার দাবি জানিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী পারভেজ আনোয়ার।
আজ রোববার বেলা দুইটার দিকে কুষ্টিয়া শহরের আড়ুয়াপাড়ায় নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি জানান স্বতন্ত্র প্রার্থী পারভেজ আনোয়ার। তিনি বলেন, ‘এটা কোনো নির্বাচন হচ্ছে না। এটাকে নির্বাচন বলা যায় না। আমার পোলিং এজেন্টদের মারধর ও কর্মীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোটকেন্দ্র দখল করে নিয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী মাহবুব উল আলম হানিফের কর্মীরা।’ এ ব্যাপারে তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানালেন।
ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী পারভেজ আনোয়ারের অভিযোগ, অধিকাংশ কেন্দ্রের বাইরে নৌকার কর্মীরা তাঁদের এজেন্টকে কেন্দ্রের ভেতরে ঢুকতে ভয়ভীতি দেখান এবং বাধা দেন। কেউ কেউ ঢুকতে পারলেও ভোট গ্রহণ শুরুর পরপরই তাঁদের মারধর করেন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়। কুওয়াতুল ইসলাম আলিয়া মাদ্রাসা আমলাপাড়ায় নারী পোলিং এজেন্টটের কাছে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্র ও নিয়োগপত্র ছিঁড়ে বের করে দেওয়া হয়, এর প্রমাণ তাঁদের কাছে আছে। হরিপুর ইউনিয়নের কয়েকটি কেন্দ্রে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি মিলন মণ্ডল পোলিং এজেন্টদের বের করে দেন। আব্দালপুর ইউনিয়নের হাসানবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পোলিং এজেন্টকে মেরে রক্তাক্ত করা হয়, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ছাড়া বিষ্ণুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জিয়ারখী, ঝাউদিয়া, বটতৈল, আলামপুর, হরিনারায়ণপুর, গোস্বামী দূর্গাপুর, মনোহরদিয়া, পাটিকাবাড়ি ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন ও পৌরসভা অন্তর্গত শতাধিক কেন্দ্রে এই ঘটনা ঘটেছে বলে পারভেজ আনোয়ারের দাবি। এ কারণে তিনি ভোট গ্রহণ স্থগিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।