Pathikrit Most Popular Online NewsPaper

    • ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাতের ফাইল ফটো

    কুষ্টিয়া অফিস।। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ড্রাইভার নিয়োগে অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত শাখা ছাত্রলীগ সভাপতির একটি অডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাতের ৪ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের অডিওতে ড্রাইভার নিয়োগের দেড় মাসেও চুক্তিকৃত ২০ লাখ টাকা পেতে বিলম্ব হওয়ার বিষয়ে কথা উঠে এসেছে।

    গত বুধবার (২২ নভেম্বর) সানজিদা আক্তার তানিয়া নামের ফেসবুক আইডি থেকে ৪ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের একটি কথোপকথনের রেকর্ড ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এতে সম্প্রতি নিয়োগপ্রাপ্ত মিলন ড্রাইভারের সাথে আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে কথা বলতে শোনা যায় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাতকে।

    অডিওতে ফয়সালকে বলতে শোনা যায়, ‘একমাস সময় নিয়ে ৩ তারিখের কথা বলে আজ ১৫ তারিখ অর্থাৎ দেড় মাস হয়ে গেল। কি করবে না করবে সেটা তো আমার দেখার বিষয় না; আমার দেখার বিষয়? মাগুরা আমার এক ভাই আছে ওকে দিলে ২৫ লাখ টাকা পেতাম আমি। ওই ভাই টাকা নিয়ে বসেছিল, ওই যে আমার বিপুল (ছাত্রলীগ কর্মী) আছে, চেয়ে নিতে যাবো কেন আমি! এক একজন ২০ লাখ টাকা খুশি হয়ে দিত। ওর চাকরির জন্য হাবিবুরের চাকরি হলো না; হাবিবুর তো আমার ভাগ্নে।’

    তাকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘হেলপারের চাকরির জন্য ২০ লাখ টাকা দিতে চায়, এতো ড্রাইভার! ওতো গাড়ি চালাতেই পারে না, গাড়ির টায়ার পর্যন্ত চেনে না ওই। বিকেলে ভেতরে এসে প্রতিদিন গাড়ি চালানো শিখছে; তাহলে সে লোকের তো একটা বিবেক থাকা উচিত! কয় আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি, হেন-তেন সাত সতেরো! ওর তো একটা বিবেক হওয়া উচিত, উচিত না?’

    ‘আমি তো একদম সাইলেন্ট হয়ে আছি। তাহলে ওতো হিসাব-নিকাশ ক্লিয়ার করবে। ও ১০ বা ২০ হাজার কম দেবে আরও কম দিক; আমার তো কম নীতি সমস্যা নেই। জয় (সাধারণ সম্পাদক ইবি শাখা ছাত্রলীগ), জয়ের বুঝটা পেয়ে গেছে, পেয়ে যায়নি? দুইটার একটা পেয়ে গেছে। জয় আমাকে বললো ভাই মিলন আপনার আত্মীয় মানুষ আপনার বাড়ির পাশে, যায় হোক না হোক আপনি মিলনের সাথে বুঝে নেন গা।’

    ‘জয় ওইটা থেকে আমাকে কিছুই দেইনি। আর জয় যদি এতক্ষন না পেত তাহলে ও তো পাগলা কুত্তার মত হয়ে যেত। জয়ের কী এখন কোন জ্বালা আছে! ওর তো কোন জ্বালা নেই। ওরটা ও পুরোটাই পেয়ে গেছে; মানে সিন্ডিকেটের ৩ তারিখ, ৩ তারিখ বিকালেই পেয়ে গেছে। মানে এখন থেকে দেড় মাস হয়ে গেল; দেড় মাস আগেই নিয়ে নিছে। আর মিলনেরটা আমার উপর দিয়ে দিছে। এবার আমার আম ছালা সব ডুকেছে। এখন ওর চাকরিই যদি না থাকে তাহলে তো……।’

    নিয়োগপ্রাপ্ত ড্রাইভার মিলন বলেন, ‘আমার যোগ্যতায় আমি চাকরি পেয়েছি। নিয়োগে আর্থিক লেনদেনের সংশ্লিষ্টতা নেই। কে বা কারা এ বিষয়টি ভাইরাল করেছে তা আমার জানা নেই।’

    ইবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নির্বাচনের সময় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের নিয়ে সুপার এডিট করে বিষয়গুলো ছড়ানো হচ্ছে।’

    এ বিষয়ে ইবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, এটা আমার কন্ঠ নয়, সুপার এডিট করে এটি প্রচার করা হয়েছে। ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে এটি প্রচার করা হয়েছে। ওই আইডির বিরুদ্ধে জিডি করার প্রক্রিয়া চলমান। আমার বিরুদ্ধে এক টাকার দুর্নীতির প্রমাণ পেলে আমি সাথে সাথে দায়িত্ব ছেড়ে দেব। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে এ কাজ করা হয়েছে।’

    কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম পান্থ বলেন, বিষয়টি সত্য হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোন অপরাধীর জায়গা ছাত্রলীগে নেই। সে যদি ছাত্রলীগের পোস্টেড কেউ হয় তবুও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

    ভিসি অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, আমি বিষয়টা শুনেছি। আমি নির্বাক। একটা ড্রাইভার কীভাবে ২০ লাখ টাকা দেয়? নিয়োগগুলো হয়তো আমার সময় হতে পারে, তবে স্বাভাবিক হয়েছে। আমি তো ২০ টাকাও খাইনি। আর অডিওর সত্য-মিথ্যা আমি কী করে বলব? এই বিষয়ে কলিগদের সঙ্গে কথা বলে নেই, তারপর আমাদের কী করণীয় তা ঠিক করব।

    Spread the love