
কুমারখালী পৌর মেয়র সামসুজ্জামান অরুন
কুষ্টিয়া অফিস॥
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনের নৌকার পক্ষে কৌশলে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু নৌকার পক্ষে ভোট চাচ্ছেন না তারা প্রতিপক্ষের সমর্থকদের প্রকাশ্যে জনসমাবেশে হুমকিও দিয়েছেন।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) কুমারখালীতে কয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কর্তৃক সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে শান্তি সমাবেশ আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় তাঁতি লীগের সহ-সভাপতি এ্যাড. নিজামুল হক চুন্নুর সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, কুমারখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, এমপি সেলিম আলতাফ জর্জের চাচা ও কুমারখালী পৌরসভার মেয়র সামসুজ্জামান অরুন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য কালে সামসুজ্জামান অরুন সেলিম আলতাফ জর্জকে ভোট না দিলে ৭ তারিখের পর ভোটারদের সাথে র্দূব্যবহার করার কথা জানান। এবিষয়ে ৫৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
সেই ভিডিও তাকে বলতে শোনা যায়, এত বড় চাপের মুখে যখন শেখ হাসিনা নির্বাচন করতেছে তখন কিন্তু তার নির্বাচনের একটা ছক আছে। নির্বাচনের একটা ছক আছে, যতই বিরোধিতা করেন যতই বাড়ি বসে বসে থাকেন, যতই আপনি রউফ সাহেব রউফ সাহেব করেন, দিনশেষে কিন্তু এমপি আমরাই হব। কাজে কাজেই ওই ৭ তারিখ পরে আপনার সাথে আমার যাতে দুর্ব্যবহার করা না লাগে, আপনার দেখিয়ে, যদি মানে আপনে যদি বাড়ি থেকে বাড়াইতে না পারেন, আমরাই কিন্তু কষ্ট পাব। তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ করব ওই সমস্ত দ্বিধাদ্বন্দ ভুলে আওয়ামী লীগ করতে হলে অবশ্যই জননেত্রী শেখ হাসিনার নৌকায় ভোট দিতে হবে। সেলিম আলতাফ জর্জ কোন বিষয় না, বিষয় হচ্ছে জননেত্রী শেখ হাসিনা নৌকা। সে জন্য আমি সমস্ত আপনাদের মাধ্যমে সমস্ত নেতৃবৃন্দের কাছে আহ্বান করব, আসুন আমরা সবাই মিলে মাঠে নেমে এক বেঈমানের বিরুদ্ধে নির্বাচন করে আবার জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় বসায়।
এদিকে তার এই বক্তব্যের পরে সাধারণ ভোটারদের মাঝে তিব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তারা সংশয় প্রকাশ করে বলেন, আমরা ভোট দিতে পারবো কিনা জানিনা। আর ভোট দিতে পারলেও নিজেদের ইচ্ছামত ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবো কিনা বলেতে পারিনা । কারণ আমাদের যে ভাবে প্রকাশ্যে হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে তাতে মনে হয় না নিজের পছন্দের প্রার্থিকে ভোট দিতে পারবো।
অবশ্য ২৮ নভেম্বর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়ে আবদুর রউফ উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেছিলেন, কুমারখালী-খোকসায় ভোটারদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে।
এবিষয়ে কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনের সতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রউফ এর মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করব।
ভোটারদের হুমকি-ধামকির বিষয়ে কুমারখালী থানার অফিসার ইনচার্জ আকিবুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু জানাই নাই। জানালে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ভোটারদের হুমকি-ধামকির বিষয়ে জানতে জেলা নির্বাচন অফিসার মুহাম্মদ আবু আনছার বলেন, আমাদের ওখানে আচরণ বিধি দেখভালের বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ আছে, তারপরে জুডিশিয়াল ইনকয়ারি কমিটি আছে, আমার মনে হয় আপনি তাদের একটু জানাতে পারেন। আর আমি বিষয়টা রির্টানিং অফিসারের নলেজে দিবো।